তাপস সাহার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের সক্রিয়তা তৃণমূলকে অনেক বেশি ধাক্কা দেবে।
মানিক ভট্টাচার্য আগেই গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু তাপস সাহার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের সক্রিয়তা তৃণমূলকে অনেক বেশি ধাক্কা দেবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তার কারণ, পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক রাজ্য স্তরে প্রভাবশালী হলেও তৃণমূল স্তরে তাঁর বিশেষ যোগ ছিল না। কিন্তু তেহট্টের বিধায়ক (পলাশিপাড়ার প্রাক্তন বিধায়কও বটে) তাপসের সাংগঠনিক প্রভাব অনেক বেশি। তা এতটাই ছিল যে ২০১১ সালে দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ে তিনি তেহট্ট কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীকে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা করে গেলেও তাঁর জনভিত্তি টলেনি এবং পরে দল তাঁকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। ২০১৬ সালে তাঁকে পাশের কেন্দ্র পলাশিপাড়ায় টিকিট দেওয়া হয় এবং তিনি জেতেন। ২০২১ সালে আবার পলাশিপাড়ায় মানিককে প্রার্থী করে তেহট্ট কেন্দ্র তাপসকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং তিনি ফের জেতেন।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তাপস সাহার বাড়ি তেহট্ট বিধানসভা কেন্দ্রে হলেও গোটা তেহট্ট মহকুমার তিনটি বিধানসভা এলাকাতেই তাঁর প্রভাব ছড়িয়ে আছে। যদিও কেউ কেউ মনে করেন, নানা কারণে তাপস এখন অনেকটাই আগের ছায়া মাত্র। কিন্তু তিনি যে পুরোপুরি শেষ হয়ে যাননি, তা সাম্প্রতিক কালে একাধিক দলীয় কর্মসূচি ও কোন্দলে প্রমাণ হয়েছে। জেলার এক প্রভাবশালী নেত্রী ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের প্রবল বিরোধিতা, দলের জেলা পরিষদ সদস্য টিনা ভৌমিক সাহার প্রকাশ্য অভিযোগ সত্ত্বেও তিনি কোণঠাসা হননি। বরং তাঁর সংগঠন একেবারে তৃণমূল স্তরে ছড়িয়ে আছে, যা পঞ্চায়েত ভোট জিততে একান্ত প্রয়োজন বলে দলের নেতাকর্মীদের একা্ংশ মনে করেন। তাঁদের দাবি, এই কারণেই নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও দল তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পারেনি।
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা তেহট্টের বাসিন্দা অর্জুন বিশ্বাসের মতে, “তাপস সাহা এক জন সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর ক্ষেত্রে বিষয়টা শুধু ভাবমূর্তির প্রশ্ন থাকছে না। তিনি ময়দানে না থাকলে সাংগঠনিক ভাবে বড় ধাক্কা খাবে তৃণমূল। কর্মীদের আত্মবিশ্বাসে ফাঁটল ধরবে।” সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাসের ধারণা, “এমনিতেই চোর তৃণমূলের থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের কর্মীরা আরও হতাশ হয়ে পড়বেন।”
তবে তৃণমূলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান নাসিরুদ্দিন আহমেদের দাবি, “মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততা দেখে আমাদের ভোট দেয়। আগামী দিনেও দেবে। অন্য কোনও কিছু সেখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে না।”