CPIM

সাংস্কৃতিক সংস্থা, ক্লাবের মন চায় বাম

সিপিএম সূত্রে খবর, তৃণমূল ও বিজেপির বিরোধী মনোভাবাপন্ন সমস্ত সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে কাছে পেতে কর্মীদের তৎপর হতে বলছে সিপিএম। 

Advertisement

বিমান হাজরা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২০
Share:

সকলের সঙ্গে সখ্য বাড়িয়ে তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্ত করতে চায় বাম। প্রতীকী চিত্র।

জনগণের থেকে একদা ‘বিচ্ছিন্ন’ হয়ে যাওয়া সিপিএম পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে স্বমহিমায় ফিরতে চায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংগঠন এবং জনসংযোগ আরও জোরদার করতে চাইছে সিপিএম। গ্রামে-গঞ্জে রাজনীতির বাইরেও এ বার তারা ‘জনসংযোগ’ বাড়াতে বাড়তিউদ্যোগী হয়েছে।

Advertisement

ক’দিন আগেই মুর্শিদাবাদ জেলায় এসে দলকে এই মর্মেই ‘বার্তা’ দিয়ে গিয়েছেন সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে তাঁর সেই ‘বার্তা’ই দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাইছে সিপিএম। পাড়ার ক্লাব থেকে শুরু করে নাট্য সংগঠন, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান থেকে পুজো কমিটি— সকলের সঙ্গে সখ্য বাড়িয়ে তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্ত করতে চায় তারা।

সিপিএম সূত্রে খবর, তৃণমূল ও বিজেপির বিরোধী মনোভাবাপন্ন সমস্ত সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে কাছে পেতে কর্মীদের তৎপর হতে বলছে সিপিএম। সম্প্রতি ফরাক্কায় সিটুর এক শ্রমিক সভায় সরাসরি আসন্ন পঞ্চায়েত ও লোকসভায় দলের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার দে স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আগামী দিনে শুধু সিপিএম ও কংগ্রেস নয়,সমস্ত তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তিকে আমাদের পক্ষে পেতে চাইছি। পাশাপাশি, ব্যক্তি বিশেষকেও পাশে নিতে চাইছি। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরোধী যারা, তা সে এলাকার ক্লাব, সাংস্কৃতিক সংস্থা হতে পারে। সবাইকে জোটবদ্ধ করতে কর্মীদের তৎপর হতে হবে।’’ সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “সকলেই যে প্রত্যক্ষ রাজনীতি করেন তা তো নয়। এমন অনেক সংস্থা আছে, মানবাধিকার সংগঠন আছে, যারা তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু একার শক্তিতে তাদের জোটবদ্ধ হয়ে ওই দুই রাজনৈতিক শক্তির বিরোধিতা করা সম্ভব নয়। তাঁদের পাশে টানতে হবে। বহু মানুষ আছেন যাঁরা পুজোর আয়োজন করেন। তাঁদের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে হবে। তাঁরা রাজনীতি করবেন, তার কোনও মানে নেই। কিন্তু দেখতে হবে, তিনি তৃণমূল ও বিজেপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতন কিনা। ছোট, ছোট শক্তিগুলিকে একত্রিত করে গণতান্ত্রিক ভাবে দু’দলকে পরাস্ত করা সম্ভব বলে মনে করে দল। সেটাই কর্মীদের বলা হচ্ছে।” তিনি এ দিন আরও বলেন, “নির্বাচনে হেরে কিছুটা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল দল। এ ভাবেই সেই জনবিচ্ছিন্নতা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছি আমরা। দলের তরুণ নেতারা মানুষের মনে অনেকটাই প্রভাব বিস্তার করেছেন। দেখা গিয়েছে, এ জেলার তরুণ নেতাদের সভাগুলিতেও স্বতঃস্ফূর্ত ভিড় হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’’ সিটুর জেলা সম্পাদক জ্যোতিরূপ বন্দ্যোপাধায় বলেন, “দলের সর্বোচ্চ স্তরের এই সিদ্ধান্তের কথা সম্প্রতি সূর্যকান্ত মিশ্র বলে গিয়েছেন। আমরা সেই বার্তাই গ্রামস্তরে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। কেউ দলের সমর্থক হোক বা না হোক, তিনি যদি তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী হন, তবে তাঁকে কাছে পেতে হবে। মানুষের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক বাড়াতে হবে।’’

Advertisement

সিপিএমের সুরে সুর মিলিয়েছে কংগ্রেসও। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলেন, “সাগরদিঘিতে জয়ের পর দলের এই নীতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন অধীর চৌধুরী। পাড়ার ক্লাব, পাড়ার পুজো, পাড়ার খেলায় সংযুক্ত হতে দলীয় কর্মীদের বলা হয়েছে।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুজিত দাস বলেন, “ওঁরা চেষ্টা করুন। সবুরে মেওয়া ফলতে পারে।” তৃণমূলের জঙ্গিপুরের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, “তৃণমূল মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছে, লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথীর দৌলতে। আমাদের তাঁদের মন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া অত সহজ নয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement