ফাইল চিত্র।
গলির মোড় থেকে পাড়ার চায়ের দোকান— আলোচনাটা জ্বলেই নিভে যাচ্ছে, এ বার কংগ্রেসের মুখ তা হলে...? কারণ, বহরমপুর জানে, এ তর্কে শান দিতে গেলে ‘তাঁর’ সঙ্গে এক বার কথা বলে নেওয়া জরুরি, তিনি অধীর চৌধুরী।
এ তালুক যে তাঁর হাতের চেলোর মতো চেনা অতি কট্টর অধীর বিরোধীও তা জানেন। পরিসংখ্যান তা নিখুঁত অঙ্ক কষে জানিয়ে দিচ্ছে— গত পুর ভোটে ২৮ ওয়ার্ডের ২৬টিই ছিল কংগ্রেসের দখলে। সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটেও বহরমপুরের ২৮ ওয়ার্ডেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে এগিয়ে ছিলেন অধীর। তা হলে?
তা হলে যা দাঁড়াচ্ছে, অধীর শুধু শেষ কথা নয়, দলের পুর-মুখও স্থির করবেন তিনি এবং তিনিই। এ ব্যাপারে এখনও মুখ খোলার মতো সময় হয়নি বলেই জানাচ্ছেন অধীর। তবে, কানাঘুষো বলেও একটা শব্দ আছে। যা পাড়ার রোয়াক থেকে টোটো স্ট্যান্ড, নির্বিচারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এবং সেই ঘূর্ণায়মান গুজবে উঠে আসছে খান তিনেক নাম।
অধীরের সাম্প্রতিক কালের অন্যতম অনুগত বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী সেই তালিকায় প্রথম দিকেই রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে দলের অনেকেই মনে করছেন, বহরমপুর পুরভোটে কংগ্রেসের যোগ্য মুখ মনোজ।
জেলার এক তাবড় কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘‘মনোজ এক নিমেষে রাজ্যের মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। আর যাই হোক তিনি অন্য দলের কাছে আলু পটলের মতো যে বিক্রি হবেন না তা দাদা (অধীর) জানেন। বহরমপুর পুরসভার ১০ বছরের কাউন্সিলর হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতাও ঢের। তাই পুরভোটে মনোজের কথা দাদা ভাবতেই পারেন।’’ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক অবশ্য বলছেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে শেষ কথা। পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে দল এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। যখন দল প্রার্থীপদ ঘোষণা করবে, তখন সব জানতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন, দলে অনেক মুখ আছে, যে কেউই পুর দায়িত্ব সামাল দিতে পারেন।’’
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস জুড়ে দিচ্ছেন, ‘‘নির্বাচনের সময় বাজারে বিভিন্ন ধরনের জল্পনা থাকে, এটাই স্বাভাবিক। এটা বোধ হয় নির্বাচনের একটি অঙ্গ।’’ তা হলে বাস্তবটা কি? তাঁর দাবি, ‘‘কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত পুরসভায় কাউকে সামনে রেখে ভোটে এগোয়নি। যা ঠিক করার অধীর চৌধুরী ঠিক সময়ে ঠিক করবেন!’’
জেলা কংগ্রেসের এক নেতা ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘এখনও অনেক খেলা বাকি আছে। তৃণমূলের প্রলোভন, ভয় দেখানো এ সবের পরেও যাঁরা টিঁকে থাকবেন তাঁদের মধ্যে থেকেই প্রার্তী বাছাই করা হবে। মনে রাখবেন, সেই তালিকায় মনোজদা নিশ্চয় থাকবেন। তাই তাঁর পুরমুখ হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে ওই যে বললাম, শেষ কথা অধীর। কারণ এখানে ভোটটা হয় ওঁর নামেই, ওঁর সমর্থনেই।’’