Aurangabad

পুর-স্বপ্নের ঘুম ভেঙেছে ফের!

অরঙ্গাবাদকে পুর শহরের মর্যাদার দাবি নিয়ে গত চার দশক ধরে বার বার সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কখনও বাম আমলে, কখনও বা কংগ্রেস আমলে। 

Advertisement

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ০০:৩৩
Share:

ফাইল চিত্র।

প্রতিশ্রুতিই সার, রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অরঙ্গাবাদের নতুন চাঁদরা গ্রামে এক অনুষ্ঠানে এসে বিড়ি শিল্পতালুক অরঙ্গাবাদকে পুরসভা করার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে গিয়েছিলেন।

Advertisement

তারিখটা আজও মনে রেখেছে বিড়ি শ্রমিক মহল্লা। রেজাউল শেখ সেই সভায় প্রতিশ্রুতি শুনে চমকে উঠেছিলেন, বলছিলেন, ‘‘২০১৫ সালের ১৬ মে, শনিবার দিনটা এখনও মনে আছে। সে দিন আনন্দের সে কি জোয়ার বয়ে গিয়েছিল গোটা বিড়ি মহল্লা জুড়ে, আজও মনে আছে।’’ তবে পাঁচ বছরেও সে আশ্বাস মেলেনি। পুর-ভোটের মুখে সেই আশ্বাস যেন নতুন করে জেগে উঠেছে।

অরঙ্গাবাদকে পুর শহরের মর্যাদার দাবি নিয়ে গত চার দশক ধরে বার বার সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কখনও বাম আমলে, কখনও বা কংগ্রেস আমলে।

Advertisement

সুতি ২ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাবও গিয়েছিল বার কয়েকপুর শহরের নকশা-সহ। জগতাই ১, ২ ও অরঙ্গাবাদ ১, ২ এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে ৩৫ হাজার বাসিন্দাকে রেখে ১৯টি ওয়ার্ড গড়ে পুরসভার সচিত্র বিন্যাস করে পাঠানো হয়, বাম আমলে রাজ্য সরকারের কাছে।

তার পরেও অরঙ্গাবাদকে কেন পুরসভা করা হয়নি, তা নিয়ে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অমল চৌধুরীর ক্ষোভ, “বার বার বলেও কিছুই করা যায়নি। এ আমাদেরও ব্যর্থতা।”

একই ভাবে অরঙ্গাবাদ পুরসভার মর্যাদা না-পাওয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন সুতি ২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাসও। এক সময় সুতি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “অরঙ্গাবাদ পুরসভার জন্য প্রস্তাবিত খসড়া পাশ করিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ করে মৌজা ম্যাপ প্রস্তুত করিয়ে আমি নিজে তা জমা দিয়ে আসি রাজ্যের তৎকালীন পঞ্চায়েত সচিব মানবেন্দ্রনাথ রায়ের হাতে। তিনি তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েও দেন। কিন্তু সব প্রচেষ্টাই জলে যায়।”

সিটুর বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের রাজ্য সভাপতি আবুল হাসনাত খান বলেন, “পুরসভা হওয়ার সব যোগ্যতা রয়েছে অরঙ্গাবাদের। ছোট বড় মিলিয়ে ৩০টির বেশি বিড়ি কারখানা রয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলার মধ্যে সব চেয়ে বড় বাণিজ্য এলাকা অরঙ্গাবাদ।’’ বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা চলে এখানে। রাজস্ব বাবদ সরকারি আয় জেলার সব এলাকার চেয়ে বেশি বিড়ি শিল্প তালুকে। পুরসভা হওয়ার প্রধান শর্ত বাসিন্দারা কৃষি ক্ষেত্রের বাইরে যদি ৬০ শতাংশ মানুষ হন, তবে তা পুরসভা হতে পারে। অরঙ্গাবাদে ৮০ শতাংশ বাসিন্দা অনাবাদি মানুষ।

সুতির বিধায়ক কংগ্রেসের হুমায়ূন রেজা অবশ্য বলেন, “বার বার পুরমন্ত্রীকে তাঁর ঘোষণার কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিধানসভাতেও তুলেছি। হয়তো কংগ্রেস সুতিতে জয়ী হয়েছে বলেই এখন আর নজর নেই অরঙ্গাবাদের উপর।’’

অরঙ্গাবাদের বাসিন্দা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলছেন, “অরঙ্গাবাদকে পুরসভা করার বিষয়টি নিয়ে বার বার বলা হয়েছে। কারণ, অরঙ্গাবাদের মতো বাণিজ্যিক শহরের উন্নয়নে প্রয়োজন উপযুক্ত পরিকাঠামো। পুরসভা হলে বরাদ্দ তো বাড়বেই। সঙ্গে বাড়বে বিভিন্ন পরিষেবা। আর বিড়ি শিল্প শহরের মর্যাদাও দ্বিগুণ হয়ে যাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement