প্রতীকী ছবি
বহরমপুরে পুরভোটে আসন রফা নিয়ে কংগ্রেসের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেল না বামেরা।
দু’দিন আগে জোটের বিষয়টি জানতে চেয়ে বহরমপুর শহর কংগ্রেস সভাপতিকে ফোন করেছিলেন সিপিএমের বহরমপুরের এরিয়া কমিটির সম্পাদক দেবাশিস মিশ্র। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহর কংগ্রেস সভাপতি ফোনেই তাঁকে জানিয়ে দেন, কংগ্রেসের উচ্চ নেতৃত্বের বহরমপুরে জোটের বিষয়ে সায় নেই। এই পরিস্থিতিতে বহরমপুরে পুর নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের আসন রফা বিশবাঁও জলে।
রবিবার সন্ধ্যায়, বহরমপুর শহর কংগ্রেসের সভাপতি কার্তিকচন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘আমাদের দলের নেতা অধীর চৌধুরী বহরমপুর পুরভোটে জোটের পক্ষে সায় দেননি। সেটাই বামেদের জানিয়ে দিয়েছি।’’
তবে, জোটের বিষয়ে এখনও হাল ছাড়তে নারাজ বামেরা। রবিবার সন্ধ্যায় সিপিএমের বহরমপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক দেবাশিস মিশ্র বলেন, ‘‘জোট হবে না এমনটা কংগ্রেস নেতৃত্বে বলেননি। অধীর চৌধুরী জোটের বিষয়ে উত্তর দেননি বলে ওদের শহর সভাপতি আমাদের জানিয়েছেন।’’ দেবাশিস বলেন, ‘‘আমরা আশাবাদী রাজ্যের অন্য এলাকার মতো বহরমপুর পুরভোটেও জোট হবে। তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে আমরা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট চাই। এ বিষয়ে দলেও ফের আলোচনা হবে।’’ এ বারে রাজ্যের সর্বত্র পুরভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য বাম নেতৃত্ব। সেই আলোচনার ভার দিয়েছে পুরসভা ভিত্তিক বাম নেতাদের। সেই মতো দিন পনেরো আগে সিপিএমের বহরমপুর এরিয়া কমিটির কার্যালয়ে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃ্ত্ব বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে বামেদের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের কাছে বহরমপুর পুর এলাকায় ১০টি আসন চেয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়। সে দিন বহরমপুর শহর কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁদের জানিয়েছিলেন, দলের নেতা অধীর চৌধুরী বহরমপুরে এলে তাঁর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সম্প্রতি অধীর দিল্লি থেকে বহরমপুরে ফেরার পর শহর কংগ্রেস নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বহরমপুর পুরভোটে বামেদের আসন রফার প্রস্তাবের বিষয়টি জানানো হয়। দলের অন্দরের খবর, অধীর জোটের পক্ষে সায় দেননি।
বহরমপুর শহর কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত। ২০১৩ সালের পুরসভা নির্বাচনে শহরের ২৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৬ টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল অধীরকে বেগ দিলেও শহরের সব ক’টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী বিপুল ভোটে এগিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে বামেদের সঙ্গে আসন রফা যুক্তিযুক্ত নয় বলে কংগ্রেসের অনেক নেতা কর্মী মনে করেন। তবুও তাঁরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন।
জেলার এক সিপিএম নেতা বলেন, ‘‘কোন দল, কোথায় শক্তিশালি তা দেখে নয়, আমরা সার্বিকভাবে সব পুরসভায় তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে আসন রফা চাইছি। সে জন্য স্থানীয় স্তরে এখনও কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কংগ্রেসেরও মনে রাখা দরকার, ভোট ভাগাভাগি হলে আখেরে তৃণমূল বা বিজেপির সুবিধা করে দেওয়া হবে।’’