প্রতীকী ছবি।
পুর লড়াইয়ে দলের মুখ হবেন কে— ধুলিয়ান ও জঙ্গিপুরের শাসক এবং বিরোধী কোনও দলের কাছেই তা স্পষ্ট নয়। এমনকি দুই পুরসভার বর্তমান পুরপ্রধানেরাও নিশ্চিত নন পুর-নির্বাচনে কত নম্বর পাবেন তাঁরা, আদৌ কি নচেয়ারম্যানের চেয়ারে ফিরবেন? বিরোধী শিবিরও উঁকি দিয়েও জানা গিয়েছে, পুর-মুখ হাতড়ে বেড়াচ্ছে তারাও।
জঙ্গিপুর পুরসভায় কংগ্রেস ক্ষমতা আসেনি কোনও দিন। এখনও তারা ঠিক করতে পারেনি প্রার্থীদের নাম। তাই পুরপ্রধানের মুখ কে হতে পারেন? প্রশ্ন শুনে ঢোঁক গিলছেন দলীয় নেতারা। কংগ্রেসের মহকুমা সভাপতি হাসানুজ্জামান প্রসঙ্গ এড়িয়ে সহজ রাস্তায় হাঁটছেন, “জেলায় সব পুরসভাতেই কংগ্রেসের মুখ অধীর চৌধুরী। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই তার নির্দেশেই ঠিক হবে জঙ্গিপুর পুরসভায় দলকে নেতৃত্ব দেবেন কে, আমরা কাউকে সেভাবে তুলেও ধরছি না তাই।” তবে তিনি না বললেও জঙ্গিপুরে কংগ্রেসের মুখ হাসানুজ্জামান বাপ্পাই, দলের অন্দরের খবর, আদৌ যদি ক্ষমতায় পেরে কংগ্রেস বাপ্পাই ছাড়া নেতা কই!
ছবিটা প্রায় একইরকম ধুলিয়ানে। সেখানেও বিশেষ কোনও মুখ সামনে আনতে চাইছে না কংগ্রেস। শহর কংগ্রেসের সভাপতি কাশীনাথ রায়ের কথায়, “জেলায় দলের একটাই নেতা, অধীর চৌধুরী। তার মডেল পুরসভা বহরমপুর। তাকে সামনে রেখেই তাই কংগ্রেস ধুলিয়ানকে বহরমপুর মডেলে গড়তে চায়। এই বার্তা মানুষের সামনে রেখেই ধুলিয়ানে পুরভোটে লড়বে কংগ্রেস।”
জঙ্গিপুরে বাম শিবিরেও এই মুহূর্তে এমন কোনও নেতা নেই যাঁকে সামনে রেখে পুরসভায় লড়া যায়। যে দু’জন নেতা জঙ্গিপুর পুরসভায় ভোট পরিচালনার মুখ জেলা কমিটির সোমনাথ সিংহ রায় ও জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য দিব্যশঙ্কর শুকুল, তাঁদের দু’জনের কেউই পুর এলাকার ভোটার নন। সোমনাথবাবু কংগ্রেসের ঢঙেই বলছেন, “আমাদের লড়ইয়ের মুখ প্রয়াত নেতা মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য। তিনি নেই ঠিকই, কিন্তু শহরের মানুষের উপর তার প্রভাব আছে এখনও। ভাগীরথীতে সেতু, পুরমার্কেট, রবীন্দ্রভবন, ম্যাকেঞ্জি স্টেডিয়াম, সবুজ দ্বীপ— সবই তাঁর হাতে গড়া। এ বারের পুর নির্বাচনে তাই মৃগাঙ্কদাই সিপিএমের মুখ জঙ্গিপুরে।” কিন্তু মানুষ তো জানতে চাইবে, বিরোধী জোট জিতলে কে পুরপ্রধান হবেন জঙ্গিপুরে?
সোমনাথবাবুর দাবি, “যাঁরা জিতবেন তাদের অনেকেরই পুরপ্রধান হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। এমনই প্রার্থী তালিকা তৈরি করছি আমরা। সেটা প্রকাশ হলে মানুষই বুঝবে কে আমাদের মুখ।’’ ধুলিয়ানে সিপিএম অবশ্য এখনই দলের মুখ বাছতে রাজি নন। দলের নেতা প্রাক্তন বিধায়ক তোয়াব আলি বলছেন, “দল ঠিক করে মুখ। নির্বাচনের পর দলই ঠিক করবে সেই মুখ কে।”
একই অবস্থা শাসক দলের। জঙ্গিপুরে তৃণমূলের জোড়া মুখ— মন্ত্রী জাকির হোসেন এবং বর্তমান পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম।
জাকির অবশ্য নিজে পুর নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন না। তবে মাঠে নেমে পড়েছেন তিনি এবং দলের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধেই! তবে, জঙ্গিপুর তৃণমূল মহকুমা সভাপতি বিকাশ নন্দ সেই চেনা রেকর্ড বাজাচ্ছেন, ‘‘দলের মুখ একটাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!’’