প্রতীকী ছবি
ভোটের দিন ঘোষণা না হলেও শহরের পুর-চেয়ারম্যান কে হবেন তা নিয়ে চাপা কৌতূহল ছড়িয়েছে বহরমপুরে। সকাল-সন্ধে জোর চর্চা শুরু হয়েছে শহরের চায়ের দোকান থেকে অফিস কাছারিতে। আর সেই চর্চায় কখনও উঠছে কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতার নাম, উঠছে তৃণমূলের মেজ-সেজ নেতাদের নাম নিয়ে তর্ক। তবে গত পুরভোটে একটা আসনও দখল করতে না-পারা বিজেপি’র কথা পাড়ার গোল টেবিলের আলোচনায় চলে আসায় কপালে ভাঁজ পড়েছে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল সকলেরই। তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান অবশ্য সে সব আলোচনায় জল ঢেলে দিচ্ছেন, “এখানে বিজেপি’র কোন ভোট নেই”। তবে জেলা কংগ্রেস মুখপাত্রের গলায় সাবধানি বাক্য, “ভোটের ময়দানে আমাদের কাছে সব দলই গুরুত্বপূর্ণ।”
তবে লড়াই করতে এক দিকে যেমন প্রয়োজন অভিজ্ঞ প্রার্থী অন্য দিকে প্রয়োজন স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। তৃণমুলের চার জেলা নেতার কাছে শহরের নতুন মুখের বায়োডেটা জমা পড়ছে। সেখান থেকেই প্রার্থী বেছে নেওয়া হবে না কি দলের কোন মুখকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে ঘোর সংশয় তৈরি হয়েছে দলেরই অন্দরে। দলের কর্মীসভায় গদ্দারদের দলে জায়গা হবে না বলে ঘোষণা করেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। এক কংগ্রেস নেতা বলেন, “২৮টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিতে হলে দলকে পুরনো মুখের পাশাপাশি নতুন মুখ তো আনতেই হবে।” বহরমপুর পুরসভা ভোটে এই দুই হেভিওয়েট দলের কথা মাথায় রেখে বিজেপি’র জেলা নেতারা প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর বর্তমানে বিজেপি নেতা কাঞ্চন মৈত্রকে পুরসভার পর্যবেক্ষক করে পুজোর পর থেকেই মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন। বিজেপি’র এক নেতা বলেন, “কাঞ্চনদা ছাড়া বহরমপুর পুরসভাকে হাতের তালুর মত আর কে চেনে!” একদা অধীর ঘনিষ্ট কাঞ্চন মৈত্রকেই চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। বিজেপি’র জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ অবশ্য ঝেড়ে কাশছেন না। বলছেন “আমাদের দল কংগ্রেস বা তৃণমূলের মতো নীতিহীন নয়। ভোটে জিতলে সবাই মিলে যাকে পুরসভার নেতা বেছে নেবে।” লোকসভা ভোটের পর বিজেপি-তে যোগ দেন কাঞ্চন মৈত্র। ২০০৩ সালে পুরভোটে ২৩ নাম্বার ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী হয়ে লড়াইয়ে নামেন কাঞ্চন। কাঞ্চনের কথায়, “সেই সময় অধীর আবেগে কংগ্রেস করতাম। দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা প্রাধান্য পাচ্ছিল বলে কংগ্রেস ছেড়ে দিয়েছিলাম।” দলের অন্দরের খবর, ২০১৫ সালে তাঁর মধ্যস্থতাতেই কংগ্রেসের ১৬ কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা ভোটের পরে কাঞ্চন যায় বিজেপিতে। বিরোধীদের কথায়, ‘‘সেই হাওয়া মোরগই এ বার বিজেপি’র চেয়ারম্যান-প্রার্থী!’’