West Bengal Lockdown

ওষুধ ও দুধ পেতে হন্যে

চারাতলা গ্রামে কলকাতা ফেরত এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ায় গোটা গ্রামকেই ঘরবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২০ ০৭:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

তাঁরা ঘরবন্দি থাকতে রাজি। কিন্তু খাবার, দুধ আর ওষুধের ব্যবস্থা কী ভাবে হবে? তিন দিন হয়ে গেল গ্রামে দুধ ঢুকছে না। ওষুধ কিনতে যেতে হবে চাপড়ায়। কিন্তু ঘর থেকেই তো বেরোতে পারছেন না তাঁরা। রবিবার জেলাশাসককে সামনে পেয়ে চাপড়ার চারাতলা গ্রামের অনেকেই নিজেদের এই অসহায়তার কথা জানান। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাবিও করেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন জেলাশাসক বিভু গোয়েল।

Advertisement

চারাতলা গ্রামে কলকাতা ফেরত এক ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ায় গোটা গ্রামকেই ঘরবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কোনও গ্রামবাসী যাতে গ্রামের বাইরে বেরোতে না পারেন এবং বাইরে থেকে কেউ যাতে গ্রামে ঢুকতে না পারে তার জন্য গ্রামের তিনটি রাস্তায় ব্যারিকেট করে দেওয়া হয়েছে। লাগানো হয়েছে তিনটে সিসি ক্যামেরা। করোনার মতো অতিমারি থেকে বাঁচতে গ্রামবাসী এই সব নিয়ম মানতে রাজি আছেন। শুধু খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন।

তবে ইতিমধ্যে প্রশাসন থেকে বাড়ি-বাড়ি রেশন সরবরাহ শুরু হয়েছে। রেশন ডিলারেরা আটা দিয়ে আসা শুরু করেছেন। কে-কে এখনও রেশনের চাল নেননি সেই তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। বাড়ি-বাড়ি মুদিখানা সামগ্রী ও আনাজ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। তবু একটা কিন্তু থেকে যাচ্ছে। গরিব চাষি এবং দিনমজুরেরা যদি গ্রাম থেকে বের হতে এবং কাজ করতে না পারেন তা হলে টাকা আসবে না। আর টাকা না থাকলে বাড়িতে জিনিস এলেও তার দাম মেটাতে পারবেন

Advertisement

এত দিন ক্ষুদ্রচাষিরা খেতের আনাজ চাপড়া বাজারে বিক্রি করে সেই টাকায় চালডাল কিনে নিয়ে আসতেন। সেটাও বন্ধ। প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার ক্ষমতা এখন তাঁদের নেই। তাঁদের আপাতত ঝারে জিনিস দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু গ্রামের এমন অনেক দরিদ্র পরিবার আছে যাদের পক্ষে পরেও এই টাকা মেটানো সম্ভব নয়। কারণ, দীর্ঘদিন তাঁরা কর্মহারা। এ দিন জেলা শাসকে সামনে পেয়ে অনেকেই সরকার থেকে বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার দাবি করতে থাকেন। কেউ কেউ বাচ্চার দুধ ও ওষুধ কেনার জন্য গ্রামের বাইরে যাওয়ার ছাড় চান। অনেকে পানীয় জলের কথাও বলেন। এ দিন জেলাশাসক বিভু গোয়েল গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। সঙ্গে ছিলেন কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই। তাঁরা দু’জনেই গ্রামবাসীদের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। জেলাশাসক বলেন, “আমি কথা বলে দেখেছি যে, একেবারে খাবার নেই এমন পরিবারের সংখ্যা খুবই অল্প। পঞ্চায়েতকে বলেছি তাঁদের তালিকা তৈরি করে দিতে। আমরা তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে যে, তেহট্টের একটি সংস্থার সঙ্গে দুধ সরবরাহের বিষয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। একই ভাবে জল সরবরাহের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক সংস্থার কথা শুরু হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement