প্রতীকী ছবি।
বাড়ির কোনও সদস্য মনোরোগে আক্রান্ত হলে এমনিতেই পরিবারের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়। তার উপরে লকডাউনে সেই রোগীকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করাতে না-পেরে বহু পরিবার বিপর্যন্ত।
এমনিতে জেলায় মানসিক রোগের চিকিৎসা পরিষেবা ভাল নয়। অধিকাংশ রোগীকে কলকাতায় নিয়ে আসতে হয়। যাতায়াত ব্যবস্থা লকডাউনে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। বাস কম চলছে, ট্রেন এখনও বন্ধ। প্রাইভেট গাড়ি বিপুল টাকা চাইছে। ফলে অনেকেই রোগীকে কলকাতায় নিয়ে যেতে পারেননি।
অনেক রোগী আবার কৃষ্ণনগর, কল্যাণী বা মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা করান। সেই সব চেম্বার করোনার আবহে বন্ধ। নদিয়ার কল্যাণীর জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল, শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে মানসিক রোগের চিকিৎসার বিভাগ রয়েছে।
কিন্তু লকডাউনে সরকারি হাসপাতালের আউটডোরেও অনেকে আসতে পারেননি। ফলে চিকিৎসায় মাঝপথে ছেদ পড়েছে অনেকের, মানসিক রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে যা মারাত্মক।
রানাঘাট শহরের বাসিন্দা এক গৃহবধূ যেমন দীর্ঘদিন ধরে সুগারের পাশাপাশি মানসিক অবসাদেও ভুগছেন। কলকাতার এক মনোচিকিৎসকের কাছে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু লকডাউনের কয়েক মাস তাঁরা ওই রোগীকে কলকাতায় নিয়ে যেতে পারেননি। চিকিৎসকও নিজের নিরাপত্তার কারণে তাঁদের যেতে বারণ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় একটি ওষুধের দোকান-সূত্রে ভিডিও কলে অন্য এক চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেন। কিন্তু পরামর্শ পেলেও তাতে লাভ খুব একটা হয়নি।
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ডের করোনা টিকা অক্টোবরেই? সেই চেষ্টাই চলছে, বলছেন বিজ্ঞানীরা
নাকাশিপাড়া ব্লকের বেথুয়াডহরিতে দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তার ভবঘুরে এবং মানসিক রোগীদের নিয়ে কাজ করছেন মোসলেম মুন্সি। তাঁর সংস্থায় মানসিক রোগের এক জন চিকিৎসক আছেন। লকডাউনের সময়ে দিন দু’য়েক সেই চিকিৎসক আসতে পারেননি, তার পর এসেছিলেন। ফলে, তাঁরা খুব একটা সমস্যায় পড়েননি।
লকডাউনের সময় কাজ হারিয়ে বা ভবিষ্যতের আশঙ্কায় অনেকেই অবসাদের শিকার হয়েছেন। তাঁদের জন্য চিকিৎসক পেতেও হন্যে হতে হয়েছে পরিজনদের। কারণ, এক দিকে বেশির ভাগ মানুষ ওই সময়ে হাসপাতাল এড়াতে চেয়েছেন, অন্য দিকে প্রাইভেট চেম্বার অধিকাংশই খোলেনি।
শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁদের মনোরোগ বিভাগে তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন। লকডাউনের সময় তাঁদের বিভাগ চালু ছিল। কিন্তু রোগীর সংখ্যা ছিল অনেক কম। একই ভাবে, জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের মানসিক রোগের বহির্বিভাগেও লকডাউনে অনেক কম রোগী এসেছেন।
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে