প্রতীকী ছবি।
একে তো রেশন সামগ্রীর মান, দাম ও ওজন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার উপরে নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়েছে কুপনে ডিলারের নাম ঠিকানা নিয়ে ভুলে। বাড়ির কাছের দোকানের বদলে সেক্ষেত্রে অনেককে যেতে হচ্ছে দূরের দোকানে। লকডাউনে তাতে সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। যেমন, ইন্দ্রপ্রস্থের এক গ্রাহকের রেশন পাওয়ার কথা ওই পাড়াতেই, অথচ তাঁর কুপনে এসেছে কান্দির রেশন ডিলারের নাম।
ডিজিটাল রেশনকার্ডের জন্য গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের আগে থেকেই আবেদন করেছিলেন রেশনগ্রাহকরা। ব্লক অফিস বা পুরসভায় সেই আবেদন করেছিলেন তাঁরা।
অথচ এত দিন পরেও জেলার সব গ্রাহক হাতে ডিজিটাল রেশনকার্ড পাননি। ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে ডাক পরিষেবা। ফলে বহু মানুষের হাতে রেশনকার্ড পৌঁছয়ওনি। অনেকের রেশনকার্ড তৈরিও হয়নি এখনও। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মতো জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে রেশন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তাতেই বাধ সেধেছে এই ভুলের বহর।
জেলার প্রত্যেক ব্লক অফিস থেকে আবেদনপত্রের ভিত্তিতে আবেদনকারীদের কুপন দেওয়া হয়েছে যাতে লকডাউন পরিস্থিতিতে তাঁরা রেশন পাওয়া থেকে যাতে বঞ্চিত না হন। কিন্তু সেখানেও বেধেছে বিপত্তি। সেই কুপনে হয় গ্রাহকের নাম, না হয় তার ঠিকানা, না হয় রেশন ডিলারের নাম ভুল বলে অভিযোগ রেশন গ্রাহকদের।
এর ফলে হয়রানি ও শঙ্কা দুটোই কাজ করছে বলে দাবি তাঁদের। চুঁয়াপুরের বাসিন্দা অনুপ মুখোপাধ্যায় পেশায় টোটোচালক। তাঁর রেশন পাওয়ার কথা ভাকুড়ির এক রেশন দোকান থেকে অথচ কুপন অনু্যায়ী সেই রেশন তিনি পাবেন সুতির
মাঠ থেকে।
গোরাবাজারের বাসিন্দা বৃদ্ধ ওয়াসেফ আহমেদ বলছেন, “আমার বাড়ির পাশের রেশন দোকানের বদলে দফতরের ভুলে আমাকে কুড়ি টাকা টোটোভাড়া দিয়ে নতুন বাজারে যেতে হচ্ছে রেশন আনতে। সেটা সম্ভব হবে নয়।” আবার আবেদনপত্রে কারও বহরমপুরের বদলে হয়েছে দৌলতাবাদের ঠিকানা। এ ক্ষেত্রে রেশন ডিলাররা আগামী ছয় মাস এই অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন গ্রাহকদের।
এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের বহরমপুরের সম্পাদক বিশ্বনাথ দাস বলেন, “আপাতত ছয় মাস তাঁরা কুপনে লেখা ডিলারের কাছ থেকে রেশন পাবেন। পরে সংশোধন হলে সেই মতো ডিলারের কাছ থেকে পাবেন।”
কেন এই ভুল? জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধন পাঠক বলেন, “গ্রাহকরা আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময়ই ভুল করেছেন।’’ গ্রাহকদের উপরেই কি তা হলে ভুলের সব দায় চাপিয়ে দিচ্ছে জেলা খাদ্য দফতর। সে প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি।
সাধনবাবু বলেন, “লকডাউনের পর অফিস থেকে অথবা ওয়েবসাইট থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম ভর্তি করলেই তা ঠিক করে দেওয়া যাবে।”