লকডাউন শিথিল হতে ভিড় রাস্তায়। বুধবার নবদ্বীপে। ছবি: প্রণব দেবনাথ
কোন দোকান খোলা যাবে আর কোনটা নয়, তা নিয়ে কিছুটা দ্বিধা ছিল মঙ্গলবার পর্যন্ত। কিন্তু বুধবার কৃষ্ণনগরের থেকে করিমপুর, নবদ্বীপ থেকে নাকাশিপাড়া— জেলা জুড়ে খুলে গিয়েছে অধিকাংশ দোকানপাট।
তৃতীয় দফার লকডাউনে দোকান ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলার সরকারি নির্দেশ ঘিরে যে বিভ্রান্তি ব্যবসায়ীদের মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত ছিল, বুধবার সকালে জেলার বিভিন্ন জায়গায় দোকান বাজারের ছবি দেখে বোঝা গিয়েছে, সেই বিভ্রান্তি তাঁরা কাটিয়ে উঠেছেন।
ব্যবসায়ী মহলের খবর, সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্তি ছিল, একক দোকান বা স্ট্যান্ড অ্যালোন শপ বলতে কোনগুলিকে বোঝানো হচ্ছে তা নিয়ে। পাড়ার মোড়ে বা কোনও বাজার বা পট্টি এলাকায় রাস্তার দু’পাশে পর পর অনেকগুলি দোকান থাকতে পারে।পাশাপাশি তাদের দেওয়াল জোড়া থাকতে পারে। সেগুলি খোলা যাবে কিনা অনেকে বুঝতে পারছিলেন না। তবে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সেই বিভ্রান্তি দূর হয়েছে।
বুধাবার শপিংমল এবং বড় মার্কেট কমপ্লেক্স ছাড়া প্রায় সব ধরনের দোকানই জেলায় খুলছে। নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজের সভাপতি হরিদাস দে বলেন, “সরকারি নির্দেশিকায় যেমন বলা আছে সেই মতো বড় মার্কেট কমপ্লেক্স কোথাও খোলেনি। সেই অর্থে মার্কেট কমপ্লেক্স বড় শহর ছাড়া জেলায় খুব একটা নেই। এখানে বেশির ভাগ জায়গায় পাশাপাশি থাকলেও আদতে দোকান গুলি একক। কারণ, তাদের দরজা আলাদা।”
অন্যদিকে, নদিয়া জেলার ব্যবসায়ীদের ওই সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা এবং তারক দাস জানান, “মার্কেট কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীরাও যাতে দোকান খুলতে পারেন তার জন্য আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি।’’
কৃষ্ণনগরের পোস্টঅফিস মোড়, চ্যালেঞ্জ মোড় বা সদর মোড়ের সেই চেনা ছবি দেখা গিয়েছে বুধবার। প্রচুর মানুষ উৎসবের মেজাজে পথে নেমেছেন। নবদ্বীপের পোড়ামাতলায় ফিরে এসেছিল কুখ্যাত যানজট। অনেক জায়গাতেই মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব। করিমপুরে যেমন চায়ের দোকান খোলা পেয়ে অনেককে ভিড় করে চা খেতে দেখা গিয়েছে। বারণ থাকলেও লুকিয়ে কাজ শুরু করেছে এলাকার
কিছু সেলুন।
রানাঘাট, চাকদহ, শান্তিপুরেও ছোটবড় সব দোকানই প্রায় খুলে গিয়েছে। বড়-বড় কিছু শো-রুম না খুললেও ঝাড়পোঁছ করতে দেখা গিয়েছে। রানাঘাট, পায়রাডাঙ্গা, চাকদহ, পালপাড়া, শিমুরালি বা মদনপুরে এ দিন জামাকাপড়, জুতো, গহনা, স্টেশনারি, বইখাতা-সহ প্রায় সমস্ত দোকান খুলেছে। তবে এ ভাবে সব দোকানপাট খুলে যাওয়ায় আতঙ্কিত বোধ করছেন অনেকেই। চাকদহ সেন্ট্রাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবল দেবনাথ যেমন বলেন, “কেউ নিয়ম সে ভাবে মানছে না। আরও চোদ্দোদিন সব বন্ধ রাখলেই ভাল ছিল।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)