নিজস্ব চিত্র
নবি মুম্বইয়ের হোটেল থেকে পরিচিতদের ফোন করে চলেছেন শান্তিপুরের রাধিকা দেবনাথ। অসুস্থ মা, বাবাকে নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরতে চান। কিন্তু লকডাউনে আটকে।
ক্যানসারে আক্রান্ত মা আর প্রস্টেটের সমস্যায় প্রবল অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করাতে মুম্বই গিয়েছিলেন দুই ভাই-বোন। তখনও করোনাভাইরাসের দাপটে থমকে যায়নি গোটা দেশ। সেটা ছিল ৭ মার্চ। সেই থেকে মুম্বইয়ের ভাসি গাওয়ে হোটেলবন্দি হয়ে আছেন নদিয়ার শান্তিপুরের চার জনের এক পরিবার। দেশ জুড়ে চলা লকডাউনের কারণে এখনও পর্যন্ত বাড়ি ফেরার ব্যাপারে সামান্যতম আশ্বাসও পাননি ওই পরিবারের সদস্যেরা।
কিছুটা মরিয়া হয়ে শনিবার দুপুরে সংবাদমাধ্যমের শরণাপন্ন হন রাধিকা। বছর ঊনত্রিশের মেয়ের উপরে ভরসা করেই সুদূর মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন শান্তিপুরের বাইগাছি পাড়ার বাসিন্দা গীতা দেবনাথ এবং তাঁর স্বামী ধ্রুব দেবনাথ। গীতা দেবীর চার বছর আগে লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। ওই একই সময়ে প্রস্টেটের সমস্যা শুরু হয় তাঁর স্বামীরও। গত নভেম্বর মাস থেকে মুম্বইয়ের টাটা ক্যানসার রিসার্চ সেন্টারে চিকিৎসা চলছে গীতা দেবীর।
মুম্বই থেকে ফোনে রাধিকা জানালেন গত ৭ মার্চ তিনি মাকে নিয়ে হাওড়া থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা হন। মুম্বই পৌঁছে তিনি জানতে পারেন, বাবার অসুস্থতা ফের বেড়েছে। তৎকাল টিকিট কেটে রাধিকার খুড়তুতো ভাই নয়ন দেবনাথ ১৫ মার্চ ধ্রুববাবুকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বই পৌঁছান। একই সঙ্গে দু’জনের চিকিৎসা চলতে থাকে মুম্বইয়ে। দু’জনেই তুলনায় সুস্থ বর্তমানে। কিন্তু এখন সমস্যা আরও কঠিন। রাধিকা দেবনাথ বলেন, “হোটেলের ছোট ঘরে কার্যত বন্দি হয়ে আছি। হোটেলের দু’টো ছোট ঘরের জন্য দৈনিক ভাড়া হাজার টাকা করে গুনতে হচ্ছে।’’
ওই তরুণী অসহায় গলায় ফোনে বলেন, ‘‘আমাদের ২৪ মার্চ ফেরার কথা ছিল। সেই ভাবেই হিসাব করে এসেছিলাম। হাতের সামান্য টাকাও ফুরিয়ে আসছে।” অন্য দিকে, ওই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য বাড়ির ছোট মেয়ে অনুরাধা। কীর্তনগায়িকা হিসাবে তাঁর উপার্জন, তা দিয়েই সংসার চলে। শান্তিপুরের বাড়িতে থেকে এ দিন অনুরাধা বলেন, “প্রায় এক মাস হতে চলল কীর্তনের আসর বন্ধ। কবে শুরু হবে জানি না। কী ভাবে সামাল দেব বুঝছি না।”
সূদুর মুম্বই থেকে রাধিকার আর্তি, “যদি বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করতে পারেন, উপকার হয়!”
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।