—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মতো প্রায় ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে শুক্রবার বিকেলে বৃষ্টি নামল নদিয়ায়। সপ্তাহান্তে শনি এবং রবিবার জুড়ে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদেরা। শুক্রবার আলিপুরের আবহাওয়া দফতর থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উত্তর-পূর্ব এবং সন্নিহিত পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ক্রমশ উত্তর ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার কথা। যার প্রভাবে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি এবং ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে নদিয়ার মুখ্য কৃষি আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাস বলেন, “আমাদের জেলায় মূলত শনিবার বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ার আভাস রয়েছে। রবিবারেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হবে। তবে হালকা থেকে মাঝারি। ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস নদিয়ায় নেই।”
আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা মূলক কমলা সঙ্কেত জারি করেছে দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের জন্য। সেখানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের অন্য জেলাগুলির জন্য হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। সেখানে ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এখনও পর্যন্ত ঝড়ের কোনও সতর্কতা নেই। হিসাব মতো, এ রাজ্যে বর্ষা অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত থাকে। ফলে, এই বৃষ্টি স্বাভাবিক বলেই জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদেরা। বরং এর ফলে নদিয়ার বৃষ্টি ঘাটতির পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে বলে তাঁদের আশা। কৃষি আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নদিয়ায় বৃষ্টি হওয়ার কথা ২২১.৭ মিলিমিটার। সেখানে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১৮০.৮ মিলিমিটার। শতকরা হিসাবে ঘাটতি ১৮ শতাংশ। নিম্নচাপ সেই ঘাটতি কতটা পূরণ করতে পারে, এখন সেটাই দেখার।
যদিও পুজোর আগে শনি-রবিবারে বৃষ্টির খবরে অসন্তুষ্ট ব্যবসায়ী মহল। এমনিতেই পুজোর মুখে কেনাকাটা একদম নেই এ বার। মাসের প্রথম রবিবার বা পর দিন সোমবার গান্ধীজয়ন্তীর জন্য ছুটি থাকায় পুজোর ভাল কেনাবেচার প্রত্যাশা করেছিল ব্যবসায়ী মহল। কিন্তু নিম্নচাপ সেই আশায় জল ঢেলে দিতে পারে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, অনলাইনে কেনাকাটার হার উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। মানুষ কষ্ট করে দোকানে আসতেই চান না। তার মধ্যে বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই।
তবে নিম্নচাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন চাষিরাও। জমিতে এখন আমন রয়েছে। ভারী বৃষ্টি হয়ে জমিতে জল দাঁড়িয়ে গেলে ধানের ক্ষতি হবে, আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
সরকারি কৃষিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “জমিতে মরসুমি আনাজ আছে। বৃষ্টি লাগামছাড়া হলেই সেই আনাজের ক্ষতি হবে। যা উৎসবের মরসুমে বাজারদর চড়িয়ে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে বৃষ্টির জমা জল সবার আগে জমি থেকে বের করার ব্যবস্থা করতে হবে।”
বৃষ্টি নিয়ে ভয়ে আছেন ফুল চাষিরাও। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে জমিতে গাঁদা-সহ অন্য ফুল তৈরি হচ্ছে। এখন জোরালো বৃষ্টি হলে বড়সড় সমস্যা হবে। সামনে পর পর পুজো। সে ক্ষেত্রে ফুলের দাম আকাশছোঁয়া হতে পারে।