River Erosion

জল বাড়ছে পদ্মার, ভাঙনের আতঙ্ক ফিরছে শমসেরগঞ্জে

এই অবস্থায় অক্টোবর পর্যন্ত শমসেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙন রোধে কোনও কাজ করা হবে না জানিয়ে দিল রাজ্য সেচ দফতর।

Advertisement

বিমান হাজরা

নিমতিতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩ ০৬:৪৬
Share:

মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের পদ্মায় বাড়চে জল পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নতুন করে নদী ভাঙনের আতঙ্ক। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

এ বারের বর্ষাতেও ভাঙনই ভবিতব্য শমসেরগঞ্জের, অন্তত এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য তেমনই। মালদহ,মুর্শিদাবাদে সে ভাবে বৃষ্টি না হলেও এই মুহূর্তে বারাণসীতে জলস্তর যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আশঙ্কা বাড়ছে ৭০০ কিলোমিটার দূরে মুর্শিদাবাদে। তবে বারাণসীতে জলস্তর সোমবার বিকেলে ছিল ৬৫.২৯ মিটার, যা বিপদসীমার ৫ মিটার নীচে। সেখানে প্রতিদিনই জল বাড়ছে। স্বভাবতই আশঙ্কা বাড়ছে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জেও।

Advertisement

এই অবস্থায় অক্টোবর পর্যন্ত শমসেরগঞ্জে গঙ্গা ভাঙন রোধে কোনও কাজ করা হবে না জানিয়ে দিল রাজ্য সেচ দফতর।

সেচ দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার ভাস্বরসূর্য্য মণ্ডল বলেন, ‘‘শমসেরগঞ্জের যে সমস্ত কাজ বকেয়া রয়েছে, আপাতত তা বন্ধ থাকবে। কারণ গঙ্গার জল বাড়ছে। ভাঙন রোধের কাজ আবার শুরু হবে অক্টোবর মাসের পরে জল কমলে।” ফলে ভাঙনের আতঙ্ক বাড়ছে মহেশটোলা, প্রতাপগঞ্জ, হীরানন্দপুর, শিবপুর, দুর্গাপুর, কামালপুর পর্যন্ত ফরাক্কার ডাউনস্ট্রিমে ধুলিয়ান থেকে নিমতিতা ১৯ কিলোমিটার নদীপাড় এলাকায়।

Advertisement

শমসেরগঞ্জে গঙ্গায় জল বাড়ছে। মঙ্গলবার সকালে শমসেরগঞ্জের গঙ্গায় জলস্তর ছিল ১৮.৪২ মিটার।বিপদসীমা ২১.৯০ মিটারের ৩.৪৮ মিটার নীচে। ২০ জুলাই জলস্তর ছিল ১৮.৩১ মিটার। প্রায় প্রতিদিনই সামান্য হলেও জল বাড়ছে।

গত বছর চারেক থেকে শমসেরগঞ্জে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ১২০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুধু তাই নয়, এই মুহূর্তে নদী পাড়ে এক মিটারের মধ্যে রয়েছে শতাধিক বাড়ি।

গত ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শমসেরগঞ্জে এসে ভাঙন দেখে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে যান।যদিও সে টাকা এখনও মেলেনি। তার আগে দফায় দফায় বরাদ্দ হয়েছিল ২৭ কোটি ও ৫৩ কোটি টাকা শমসেরগঞ্জের জন্য। দুই ক্ষেত্রেই টেন্ডার হয়ে বালি বোঝাই বস্তা ফেলে কাজ শুরু হয়। কিন্তু শমসেরগঞ্জের গঙ্গা ভাঙন আটকানো যায়নি।

মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে যান, ভাঙনের দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে স্থানীয় মানুষ যাতে নদী থেকে অন্তত ১০ কিলোমিটার দূরে ঘরবাড়ি করেন তার উপর নজরদারি চালাতে, যাতে তা অন্তত ২০ বছর টিকে থাকে। কিন্তু নিজের ভিটে ছেড়ে এখনও পর্যন্ত কেউ যাননি কোথাও। বিপদ মাথায় বসবাস করছেন প্রায় শ’পাঁচেক পরিবার এখনও। যদিও তাঁদের আশঙ্কা, নদী পাড়ের বাড়ি এ বারের বর্ষায় আর টিকবে না।

নদীর পাড় থেকে বহু দূরে এক বিঘে জমির উপর বাবা পাকা বাড়ি গড়ে তুলেছিলেন। সেখানেই থাকেন তিন ভাই। এখন বাড়ির দু’মিটার দূরে নদী। রণজিত সাহা বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী সকলের কাছে আবেদন আমাদের ভাঙন থেকে রক্ষা করুন।” ফিরোজ শেখ বলছেন, “নদী উঠোনে, কেউ কিচ্ছু করছে না। শমসেরগঞ্জ ও সুতিতে ৫ জন বিধায়ক ও এক জন সাংসদ বাস করেন শাসক দল তৃণমূলের।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement