নিহত মতিরুল ইসলাম বিশ্বাস। ফাইল চিত্র।
নিহত মতিরুল ইসলাম বিশ্বাস কি ক্রমশ মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক রেষারেষির মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছিলেন? সময় যত এগোচ্ছে ততই যেন এই প্রশ্নটাই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে।
পুলিশের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে নিহতের স্ত্রী রিনা বিশ্বাস সিআইডি চদন্তের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট মামলা দায়ের করার পর থেকে পারস্পরিক চাপানউতোর আরও প্রকট হতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, কেন রিনা বিশ্বাস ১০ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও তাঁদের এক জনকেও পুলিশ গ্রেফতার দূরে থাক, থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদটুকু করল না? পুলিশের এই নিস্পৃহতার পিছনে বিশেষ কোনও দায় রয়েছে কিনা, সেই প্রশ্নও উঠছে। যদিও মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন,‘‘অভিযোগে কারও নাম থাকতেই পারে। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ উঠে আসছে তাদেরকেই জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। তদন্ত এখনও চলছে। যদি আরও কারও বিরুদ্ধে প্রমাণ উঠে আসে তা হলে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হবে।’’দিন কয়েক আগে মুর্শিদাবাদের নওদা থানার শিবনগরে খুন হন নদিয়ার নারায়ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী তথা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের নেতা মতিরুল ইসলাম বিশ্বাস। মতিরুলের পরিবার ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, এই খুনের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত মুর্শিদাবাদের নওদা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সফিউজ্জামান সেখ ওরফে হাবিব ও নওদা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ফিরোজ সেখ। অভিযোগ, নারায়ণপুর এলাকায় একটি ইটভাটা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়াও দলীয় কোন্দলের কারণে খুন করা হয়েছে মতিরুলকে। নিহত মতিরুলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ নারায়ণপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামী সাজিজুল হক ওরফে মিঠু দের অভিযোগ, “নদিয়া জেলা পরিষদের সদস্য টিনা ভৌমিক সাহার সঙ্গে নওদার ব্লক সভাপতি হাবিবের যোগাযোগ আছে। এদের মাঝখানে আছে রাজকুমার, পিঙ্কু। এরা সকলেই মতিরুলের বিরোধী ছিল।” তাঁর অভিযোগ, “একটা ইটভাটায় তিন জনেরই শেয়ার আছে। হাবিবেরা প্রায় দিনই এ পারে এসে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করত। রাজনৈতিক ভাবে না পেরে টিনা ভৌমিক সাহা ওদের সাহায্য নিয়ে মতিরুলকে সরানোর চক্রান্ত করেছে।” টিনা ভৌমিক সাহার দাবি, “রাজনৈতিক ভাবে না পেরেই আমাকে মিঠুরা কালিমালিপ্ত করতে চাইছে।”