Serampore

প্রাথমিকে পড়ুয়া ফেরাতে উদ্যোগ স্কুলের

শিক্ষিকা ঈশিতা চট্টোপাধ্যায় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা স্থানীয় হরিজন পল্লি-সহ আশপাশের এলাকায় গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:২৯
Share:

অভিনয়ের মাধ্যমে গাছ বাঁচানোর বার্তা। নিজস্ব চিত্র।

ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তির প্রবণতায় শ্রীরামপুরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রভাসনগরে মাহেশ বিদ্যানিকেতনে ছাত্রছাত্রী কমছিল। তাদের ফেরাতে বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পঠনপাঠনে সময়োপযোগী ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়। ফলও মিলছে হাতেনাতে। আশির ঘরে নেমে যাওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশ কিছুটা বেড়েছে বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

ওই হিন্দিমাধ্যম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫০ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি উৎসবে পড়ুয়ারা নানা অনুষ্ঠান করল। এসেছিলেন হুগলির জেলা বিচারক শান্তনু ঝা, স্থানীয় বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন, শ্রীরামপুরের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অতনু মান্না, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন শিল্পা নন্দী প্রমুখ।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, আগে প্রতিষ্ঠানের অন্য নাম ছিল। হিন্দিমাধ্যম চালু হয় ১৯৭৫ সালে। ৩৩ বছর প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন কবিতা রায়চৌধুরী। ২৫০-৩০০ ছাত্রছাত্রী ছিল। ইদানীং পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে থাকায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা হাল ধরেন।

Advertisement

শিক্ষিকা ঈশিতা চট্টোপাধ্যায় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা স্থানীয় হরিজন পল্লি-সহ আশপাশের এলাকায় গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। ওয়ার্ডের শিক্ষা কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় পুরসদস্য পিন্টু নাগ পাশে দাঁড়়ান। তাঁর উদ্যোগে দু’টি কম্পিউটার মেলে। কম্পিউটার শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে পড়ুয়াদের আগ্রহী করে তুলতে পড়ানো শুরু হয় শিক্ষা সরঞ্জামের সাহায্যে। আঁকা, নাচ, নাটক, অভিনয়ের চর্চা চলে। টিফিনের সময়ে ক্যারম, লুডো, দাবা, লাফদড়ি, কানামাছি খেলা চলে। সামনের মাঠে চলে দৌড়, লং জাম্প, হাই জাম্প। রিয়াকুমারী সিংহ এবং আরিয়ান পাসোয়ান সম্প্রতি শ্রীরামপুর মহকুমা স্কুল ক্রীড়ায় যোগ দিয়েছে। যোগাসন, আত্মরক্ষার ক্লাসও হয়। ভাল-খারাপ স্পর্শ, শৌচাগার ব্যবহার ইত্যাদি নিয়ে খুদেদের শেখানো হয়।

ওই শিক্ষিকার সন্তুষ্টি, ‘‘বাচ্চারা এখন অনুপস্থিত প্রায় থাকেই না।’’ প্রধান শিক্ষক মনোজকুমার সাউ জানান, পড়ুয়ারা মূলত আর্থ-সামাজিক ভাবে দুর্বল পরিবারের। অনেকে প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেন তাঁরা। অন্য দুই শিক্ষক হলেন কাদুরি ভীমা রাও এবং শালিনী সিংহ।

লাগোয়া জলাজমি বর্ষায় ডুবে গেলে ক্লাস করা যেত না। তখন কমিউনিটি সেন্টারে পড়ানোর ব্যবস্থা করে দেন পিন্টু। কোভিডের সময়ে স্থানীয় পার্কে পড়ানো হয়েছে। বিধায়ক তহবিলের টাকায় স্কুলের জমি উঁচু করে একটি হলঘর হয়েছে। সীমানা-প্রাচীর হয়েছে। দেওয়ালে ছবি আঁকা হয়েছে। পিন্টুর কথায়, ‘‘পড়ুয়া বাড়ছে। আমরা পাশে আছি। পরিকাঠামো আরও উন্নতির চেষ্টা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement