Voter card

দ্বিগুণ বেড়েছে ভোটার, কার্ড শোধরানোর আর্জি

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষ করে এপিক কার্ডের নাম, ঠিকানা ও বয়স সংশোধন করতে চেয়ে বহু মানুষ আট নম্বর ফর্ম পূরণ করেছেন। এ বার পূরণ করা ফর্মের সংখ্যা গত বারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। আবার কিছু কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে এই ফারাকটা দ্বিগুণেরও বেশি। 

Advertisement

মনিরুল শেখ 

কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রতি বছরেরই শেষের দিকে ভোটার তালিকায় নাম তোলা এবং মৃত্যু বা বহু দিন ধরে কোনও জায়গায় না থাকার কারণে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কাজ চলে। এ ছাড়াও ভুল সংশোধনের কাজও হয়। এ বছর দেখা যাচ্ছে, এই প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীর সংখ্যা গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষ করে এপিক কার্ডের নাম, ঠিকানা ও বয়স সংশোধন করতে চেয়ে বহু মানুষ আট নম্বর ফর্ম পূরণ করেছেন। এ বার পূরণ করা ফর্মের সংখ্যা গত বারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। আবার কিছু কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে এই ফারাকটা দ্বিগুণেরও বেশি।

২০১৯ সালের ভোটার তালিকা প্রস্তুত করার জন্য ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। ওই বছরে দেখা যায়, লোকজন সে ভাবে অনলাইনে সংশোধন করতে চেয়ে আবেদন করতে চাননি। সরাসরি অফিসে গিয়ে তালিকায় নাম তোলার আবেদন করেন অধিকাংশ মানুষ। ভুল সংশোধনের আবেদনও করেন। এ ছাড়াও এক বিধানসভা থেকে অন্য বিধানসভায় ভোটার হতে চেয়ে এবং বিধানসভার ভিতরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার ভোটার হতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে সব চেয়ে বেশি সংখ্যক লোক আবেদন করেছিলেন নতুন ভোটার হতে চেয়ে।

Advertisement

প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। ভোটার তালিকা তৈরির সময় নাম, ঠিকানা বা বয়সের সংশোধন করতে চেয়ে খুব বেশি মানুষ আবেদন করতেন না। এ বার ছবিটা একেবারেই আলাদা। ২০২০ সালের ভোটার তালিকা তৈরির জন্য গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ভোটারদের ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম নেওয়া হয়। এই কাজটা ভোটাররা নিজেরাই অনলাইনে করতে পারতেন। ওই সময়েই দেখা যায়, অস্বাভাবিক ভাবে বহু মানুষ অনলাইনে ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করছেন। তার ফলে ওই প্রোগ্রামের সময়সীমা তিন দফায় বাড়াতে হয়। ওই কাজ শেষ হওয়ার পর সশরীরে ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন, বিযোজন ও ভুল সংশোধনের কাজ শুরু হয়। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর ওই কাজ শুরু হয়। শেষ হয় চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি। এখন ওই সব আবেদন যাচাইয়ের কাজ চলছে। এ বছর চাকদহ বিধানসভা কেন্দ্রেরই ৭৫১৬ জন ভোটার নিজেদের নাম, ঠিকানার বানান ঠিক করার জন্য আবেদন করেছেন। আর কল্যাণী বিধানসভা এলাকার ৭৩০২ জন ভোটার সংশোধনীর জন্য আট নম্বর ফর্ম পূরণ করেছেন। হরিণঘাটা বিধানসভা এলাকার ৮৪৫৪ জন ভোটার নাম-ঠিকানা সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন। অথচ গত বছর ওই বিধানসভা এলাকার ৩৯৪৯ জন ভোটার নাম-ঠিকানা সংশোধনের জন্য আবেদন করেছিলেন। আর একই বিষয়ে গত বছর চাকদহ ও কল্যাণী বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৪২৩৯ ও ৪২৪০ জন। তেহট্ট-১ নম্বর ব্লকের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকেও বিপুল সংখ্যক মানুষ আট নম্বর ফর্ম পূরণ করেছেন।’’ বিপুল সংখ্যক লোকের এই আট নম্বর ফর্ম পূরণের কারণ হিসাবে জেলা ও মহকুমা স্তরে নির্বাচনের কাজের সঙ্গে যুক্তরা জানাচ্ছেন, আসলে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির কারণে পরিবারের সকলেই চাইছেন তাঁদের পদবির বানান হুবহু একই হোক। আর ঠিকানার বানানও হুবহু এক হোক। পরিবারের একজনের ঠিকানা ও পদবিকে সঠিক ধরে বাকি সকলেই তাঁর ভোটার কার্ডে থাকা পদবি ও ঠিকানার বানান এক রাখতে চাইছেন। বহু ক্ষেত্রেই এটা করতে গিয়ে পরিবারের অনেকেরই তথ্য সংশোধন করা জরুরি হয়ে পড়ছে। এই কারণেই এত বিপুল সংখ্যক মানুষ সংশোধনীর ফর্ম পূরণ করেছেন। ধুবুলিয়ার বাসিন্দা জহিরুল শেখ বলেন, ‘‘ভোটার তালিকায় আমার বাবার নামের পাশে ইংরেজিতে শেখ লেখা রয়েছে। আমার এবং আমার ভাইয়ের ক্ষেত্রে তা নেই। ফলে আমরা দুই ভাই শেখ এর বানান সংশোধনের আবেদন করেছি। না হলে নাগরিক পঞ্জিতে তো সমস্যা হতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement