সঙ্গীতা মেট্যা (বাঁ দিকে), প্রতিমা ঘোষ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবন্ধকতা ছিল পাহাড়প্রমাণ। কিন্তু অদম্য জেদে তা-ই ডিঙিয়ে এখন দুই কন্যার সামনে সবুজ ঘাসজমি।
এক জন প্রতিমা ঘোষ। সাকিন নদিয়ার ধুবুলিয়া থানার মায়াকোল গ্রাম। অন্য জন সঙ্গীতা মেট্যা। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানা এলাকায় চিলকা গ্রামে তাঁর বাড়ি। দু’জনই এ বারে চললেন ব্রিটেনের বার্মিংহামে। দেশের হয়ে দৃষ্টিহীনদের বিশ্বকাপ ফুটবলের সমতুল্য প্রতিযোগিতায় খেলতে। বার্মিংহামে এই খেলার আসর বসতে চলেছে ১২ অগস্ট থেকে। চলবে ২১ অগস্ট পর্যন্ত।
ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফর ব্লাইন্ড অব বেঙ্গল-এর সাধারণ সম্পাদক গৌতম দে বলেন, ‘‘এই বিশ্ব ফুটবল প্রতিযোগিতায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছে বাংলার দুই মেয়ে সঙ্গীতা এবং প্রতিমা। দু’জনই জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের রাজ্যে দৃষ্টিহীনদের ফুটবল খেলা সংক্রান্ত পরিকাঠামোই নেই। আর্থিক সুযোগ-সুবিধা তো নেই বললেই চলে। তা-ও পড়াশোনার সঙ্গে এঁরা দু’জন ফুটবল চালিয়ে গিয়েছেন। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ওঁদের পরিশ্রম সফল হয়েছে।’’জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে উত্তেজিত সঙ্গীতা এবং প্রতিমা, দু’জনই। সঙ্গীতা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। প্রতিমা স্নাতকোত্তরে পড়ছেন। পড়ার পাশাপাশি ফুটবল অন্তপ্রাণও তাঁরা। সঙ্গীতা বলেন, “অনেকগুলি স্তর পেরিয়ে তার পরে এই দৃষ্টিহীন বিশ্ব ফুটবল প্রতিযোগিতায় আমরা সুযোগ পেয়েছি। আমাদের দেশকে জিতে আসতেই হবে।”
সঙ্গীতা এবং প্রতিমা জানান, ফুটবলের প্রতি ভালবাসা সেই ছোটবেলা থেকে। গ্রামে পাড়ায় ছেলেরা ফুটবল খেলত। তাঁরা দেখতে পেতেন না। কিন্তু খেলার সময়ে আওয়াজ, গোল হলে চিৎকার শুনে তাঁদের ভাল লাগত। দুই জেলার দুই মেয়ে একই ভাবে ভেবেছিলেন, এক দিন মাঠে নামতেই হবে। এখন তাঁরাই দেশের হয়ে নামবেন বিশ্ব-মােঠ।