আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের পরে সাংবাদিক বৈঠক পুলিশ সুপারের। নিজস্ব চিত্র
নেহাতই ছাপোষা এক নিরীহ গ্রামবাসী। দেখে বোঝার নেই যে আগ্নেয়াস্ত্র কেন, কোনও রকম পাচারের কাজে যোগ থাকতে পারে তার। অথচ তার কাছ থেকেই মিলল ১০টি সেভেন এমএম পিস্তল এবং ৫০ রাউন্ড ৭.৬৫ এমএম কার্তুজ।
শুক্রবার ভরদুপুরে সুতি থানার পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ছবি সিংহকে গ্রেফতার করার খবর বিশ্বাস করতে পারছেন না শমসেরগঞ্জের জিয়তকুন্ড গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামে তিনি ডেকরেটর শ্রমিক হিসেবে পরিচিত। সেই ছবি দিনমজুরের আড়ালে বহু দিন থেকেই আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি পাচারের ‘ক্যারিয়ার’ হিসেবে জড়িত বলে পুলিশ জেনেছে। ওই আগ্নেয়াস্ত্রের মূল কারবারি শমসেরগঞ্জেরই আলমশাহী গ্রামের প্রবীর সিংহের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জানান, সুতির এক জনের কাছে গুলি-সহ আগ্নেয়াস্ত্রগুলি পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল ছবির। সে যার কাছ থেকে এইসব আগ্নেয়াস্ত্র এনেছিল তার নামও পাওয়া গিয়েছে। ছবি ক্যারিয়ার হিসেবেই সেগুলি নিয়ে এসেছিল।
নিমতিতা পঞ্চায়েতের জিয়তকুণ্ডু গ্রাম শমসেরগঞ্জ থানা এলাকার মধ্যে পড়লেও ২০ মিটারের মধ্যেই সুতি থানার এলাকা। জিয়তকুণ্ডু থেকে বেরিয়েই সুতির সড়ক পথ ধরে মধুপুর গ্রাম ঢোকার আগেই সম্প্রতি গড়ে উঠেছে পিকনিক করার একটি জায়গা। সেই পিকনিকের জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র হাত বদলের খবর ছিল সুতি থানার কাছে।
সেই মতো ওসি অরূপ রায়-সহ জনা পাঁচেক পুলিশকর্মী সেই মতো ওত পেতেছিলেন। সেখানেই ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরে দেখা যায়, একটি থলে নিয়ে অপেক্ষা করছে ছবি সিংহ। প্রথমে তাকে দেখে সন্দেহ করার মতো কিছু মনে হয়নি পুলিশের। কিন্তু একই জায়গায় বেশ কিছুক্ষণ ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে পুলিশের
সন্দেহ বাড়ে।
তখনই সাদা পোশাকের পুলিশেরা তাকে ঘিরে ধরে। ব্যাগে তল্লাশি চালাতেই মেলে বিপুল সংখ্যায় গুলি ও আগ্নেয়াস্ত্র। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্থানীয় এক জনের হাতে ব্যাগটি তুলে দেওয়ার জন্যই পাঠানো হয় তাকে। তার বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল তার।