উপাচার্য অমলেন্দু ভূঁইয়া। সোমবার কল্যাণীতে। নিজস্ব চিত্র।
পদত্যাগ করতে চেয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অমলেন্দু ভূঁইয়া। রাজ্যপালকে লেখা ইমেল তিনি জনসমক্ষে পড়েও শুনিয়েছেন। তবে কেন এই সিদ্ধান্ত সেই বিষয়ে চিঠিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
গত এক বছর ধরে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে টিএমসিপি ও তৃণমূলপন্থী অস্থায়ী কর্মী সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সোমবারও উপাচার্যের ঘরের বাইরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোঙে দাবি করা হয়, পঠনপাঠনের মান কমছে। ২০২১ সালে স্নাতকোত্তর দূরশিক্ষায় ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীরা ২০২৪ সালেও প্রথম সিমেস্টার দিতে পারেননি। রাজ্য সরকারের নির্ধারিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে হবে ইত্যাদি। এ দিন বিক্ষোভকারীদের সামনে পদত্যাগপত্র পড়ার সময়ে উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, "সবাই চাইছেন, আমি যাতে চেয়ারে না থাকি। যে কারণে আমি আমার পদত্যাগপত্র যথাস্থানে পাঠিয়েছি। পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করা না করার বিষয়টি তাঁদের বিষয়।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের ৩১ মে আচার্য তথা রাজ্যপাল অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে অমলেন্দু ভূঁইয়াকে নিয়োগ করেন। আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কখনও আবার উপাচার্যের শিক্ষাগত যোগ্যতা জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আরটিআই করা হয়েছে। এ দিন টিএমসিপি নেতা ইয়াসিন জামানের দাবি, "বিভিন্ন সময়ে আগেই আমরা উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছি। অথচ সমস্যা সমাধানে সদিচ্ছা দেখাননি তিনি। তাই আমাদের দাবি ছিল, হয় তিনি সমস্যার সমাধান করুন অথবা পদত্যাগ।"
তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির তরফে অস্থায়ী কর্মী সন্দীপ বাখুন্ডির দাবি, "রাজ্য সরকারের বেতন কাঠামো মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দেওয়া হয় না। সার্বিক উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। পড়াশোনার মান তলানিতে ঠেকেছে। তাই আমরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিলাম।" আর, বামপন্থী ছাত্রনেতা সবুজ দাসের দাবি, "রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় অচলায়তন তৈরি হয়েছে। রাজ্যপাল চাইছেন, তাঁর পছন্দের ব্যক্তিকে উপাচার্য করতে। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, উপাচার্য হোক তাঁর পছন্দের। এই লড়াইয়ের মধ্যে প্রকৃত অর্থে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে।"