জখম দুই ছাত্র, ক্ষোভের আগুন কয়লার ট্রাক্টরে

কয়লা বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় দুই ছাত্রের আহত হওয়ার ঘটনায় অশান্ত হয়ে উঠল গোপীনাথপুর। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পলাশিপাড়া শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৯
Share:

নেভানো হচ্ছে পুলিশের গাড়ির আগুন। মঙ্গলবার পলাশিপড়ায়। নিজস্ব চিত্র

কয়লা বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় দুই ছাত্রের আহত হওয়ার ঘটনায় অশান্ত হয়ে উঠল গোপীনাথপুর।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে পলাশিপাড়ায় এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে বড় পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ট্রাক্টর চালক গ্রেফতার হলেও গোলমালের ঘটনায় রাত পর্যন্ত কাউকে ধরা হয়নি।

মাসখানেক আগে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার জেরে পুকুরের পাড় ধসে কারিগরপাড়া গ্রামের দুই স্কুলছাত্রী রিজিয়া খাতুন ও আহেমা খাতুনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই থেকেই গ্রামের অনেকে ফুঁসছিলেন। তার পরেই এই ঘটনায় তাঁরা রাগে ফেটে পড়েন।

Advertisement

স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ সাইকেলে চেপে অষ্টম শ্রেণির রানা মোল্লা ও পঞ্চম শ্রেণির রিজুয়ান মোল্লা গোপীনাথপুর বিদ্যামন্দির উচ্চ বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল। উল্টো দিক থেকে আসা একটি কয়লা বোঝাই ট্রাক্টর বাঁক ঘোরার সময়ে রানার মাথায় ধাক্কা লাগে। দু’জনেই সাইকেল নিয়ে উল্টে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। আহত অবস্থায় তাদের টোটোয় চাপিয়ে পলাশিপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রিজুয়ান বাড়ি ফিরলেও রানাকে শক্তিনগর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় ইটভাটার জন্য অবৈধ ভাবে মাটি কাটা হয়। সেই মাটি বোঝাই ট্রাক্টর দিনরাত পাড়ার রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ায়। পুলিশ-প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কাজ হয়নি। এ দিন স্কুল ও পঞ্চায়েতের সামনে দুর্ঘটনার পরেই স্কুলের ছাত্ররা ও এলাকার বেশ কিছু মানুষ জমায়েত হয়ে ক্ষোভ জানাতে থাকে। পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে ক্ষোভ আরও উসকে ওঠে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ পাশে পঞ্চায়েত অফিস চত্বরে তাদের গাড়ি ঢুকিয়ে দেয়। কিছু ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বার করে নিয়ে এসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পঞ্চায়েতের বেশ কিছু জিনিসপত্রও ভাঙচুর করা হয়। তেহট্ট থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। পরে পুলিশ ট্রাক্টরটি আটক করে চালককে গ্রেফতার করে।

গোপীনাথপুর পঞ্চায়েতের প্রধান শফিতা সর্দার জানান, পঞ্চায়েত খোলার আগে এই ঘটনা ঘটে যাওয়ায় পরে আর অফিস খোলা হয়নি।

গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সায়ন্তন দাস বলেন, “কিছু দিন আগেই স্কুলের দুই ছাত্রী মাটি চাপা পড়ে মারা যায়। সেই ক্ষোভ ছিল। এ দিন কয়লা বোঝাই ট্রাক্টরের ধাক্কায় ছাত্রেরা আহত হওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। স্কুলের সময় অর্থাৎ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত যদি এই রাস্তায় ট্রাক্টরের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তবেই এমন দুর্ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব।” পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার দাবি, প্রশাসনের কিছু কর্মীর অবহেলায় এ সব হচ্ছে। ওই রাস্তায় ট্রাক্টর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement