জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। কালীগঞ্জের হাটগাছা গ্রামে। ছবি: সন্দীপ পাল।
গ্রামে জগদ্ধাত্রী পুজো বলতে রয়েছে একটি মাত্র পুজো। আর ওই পুজো ঘিরেই গ্রাম জুড়ে উৎসব-আনন্দের পরিবেশ তৈরি হয়। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, হাটগাছা গ্রামে জগদ্ধাত্রী পুজো এ বার ১০২ বছরে পা দিল।
গ্রামের পূর্ব প্রান্তে আছে জগদ্ধাত্রী পুজোর স্থায়ী মণ্ডপ। ১৯২২ সাল থেকে ওই স্থানেই পুজোর শুরু। ওই জায়গাটি ’ভদ্রকালীতলা’ নামেও পরিচিত। স্থানীয়দের কথায়, রীতি মেনে সূর্যোদয়ের পর সূর্যের পূর্ণ আভার রূপ দেখে পুজো শুরু হয়। গ্রামে এই জগদ্ধাত্রী পুজোকে ঘিরে রয়েছে জনশ্রুতি। গ্রামবাসীদের মুখেই শোনা গেল, অতীতে ওই গ্রামে দুর্গাপুজো শুরু হলেও পর পর দুই বছর গ্রামে মহামারি হওয়ায় দুর্গাপুজো বন্ধ হয়ে যায়। জনশ্রুতি, ওই গ্রামের এক বাসিন্দা কমল চট্টোপাধ্যায় স্বপ্নাদেশ পান। শোনা যায়, ভদ্রকালী স্বপ্নাদেশ দেন— ওই গ্রামের পূর্ব দিকে জগদ্ধাত্রী বিরাজ করে। তাই ওই গ্রামে কোনও দিন দুর্গা পুজো করা যাবে না। ওই ঘটনার পর গ্রামের প্রবীণেরা আলোচনায় বসেন। গ্রামের পূর্ব দিকে এক গাছতলায় জগদ্ধাত্রী প্রতিমা গড়ে পুজোর শুরু হয়। তার পর থেকেই ওই গ্রামে নিয়ম মেনে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে আসছে।
স্থানীয়েরা জানালেন, তিন দিন ধরে চলে জগদ্ধাত্রী পুজো। ওই পুজো ঘিরে থাকে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুজো উদ্যোক্তাদের কথায়, সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পুজো এক দিনে করা হলেও পরের দিন দশমী পুজো হয়। প্রতি পুজোর আগেই নিয়ম করে নিরামিশ ভোগ রান্না করা হয়। তবে দুপুরের ভোগে কই মাছ লাগবেই। পুজো উদ্যোক্তা পুলক ঘোষ বলেন, ‘‘হাটগাছা গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে এই তিন দিন একটা উৎসব। শুধু হিন্দুরাই নয়, গ্রামের মুসলিম পরিবারও মেতে ওঠে এই উৎসবে।’’