বাজেট শুনছেন বহরমপুরবাসী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
সিগারেটের উপর এ বারে ১৬ শতাংশ কর আরোপ করা হল কেন্দ্রীয় বাজেটে। তবে আপাতত স্বস্তি মিলল বিড়িতে। বুধবারের বাজেটে কোনও কর বসানো হয়নি বিড়ির উপর।
জঙ্গিপুর বিড়ি শিল্প নির্ভর। প্রায় ৬ লক্ষ শ্রমিক প্রত্যক্ষ ভাবে কাজ করেন বিড়ি শিল্পে। এ ছাড়া, লক্ষাধিক শ্রমিক অপ্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত এই শিল্পে। স্বভাবতই বাড়তি কর বসলে বিড়ি শিল্পে তার প্রভাব পড়ত এবং শ্রমিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন বলেই মনে করছেন বিড়ি মালিকেরা।
বিড়ি মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজকুমার জৈন বলেন, “এমনিতেই বিড়ি শিল্প ধুঁকছে। বিক্রিও কমেছে। সেক্ষেত্রে বাড়তি কর বসলে আরও ক্ষতি হত শিল্পের। এতে শ্রমিকেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হতেন বেশি। এ বারের বাজেট নিয়ে তাই আশঙ্কা ছিল বিড়ি শিল্প মহল্লায়। ১৬ শতাংশ বাড়তি কর বসেছে সিগারেটের উপর। এতে সিগারেট আরও দামি হবে। তাতে বিড়ির বিক্রি বাড়তে পারে। তবে পরিষ্কার চিত্র পেতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।”
বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সম্পাদক মহম্মদ আজাদ বলেন, “কর না বসানোয় এ যাত্রা হয়তো বিড়ি শিল্প রক্ষা পেল। মালিকেরা কিছুটা বাঁচলেন। কিন্তু এতে শ্রমিকেরা কতটা লাভবান হবেন? বিড়ি মালিকদের এটাও ভাবতে হবে। শ্রমিকেরা এখনও সরকারের ন্যূনতম মজুরি পান না। এখন দিনভর খেটে বিড়ি শ্রমিকেরা মজুরি পান মাত্র ১৭৮ টাকা। কাজও কমেছে। বিড়ি বন্ধ হলে মালিকেরা টাকা লাগাবেন অন্য ব্যবসায়। কিন্তু শ্রমিকদের কী হবে, সে ভাবনা নেই কারও।”আর এই বাধ্যবাধকতার সুযোগ নিচ্ছে বিড়ি মালিকেরা এই অভিযোগ তুলে মহম্মদ আজাদ বলছেন, “ধীরে ধীরে শ্রমিকদের কাজ কমিয়ে দিয়েছেন বিড়ি মালিকেরা। তাদের যুক্তি, জিএসটি ও বিধিনিষেধের ঠেলায় বাজারে বিড়ির বিক্রি নাকি কমে গিয়েছে। অথচ সরকারি সমীক্ষা বলছে ১৯৯৮ সালে যেখানে ধুমপায়ীর সংখ্যা ছিল ৭৯ মিলিয়ান, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৮ মিলিয়ান। প্রতিবছর সে সংখ্যা বাড়ছে ১.৭ মিলিয়ান হারে। এর মধ্যে ৪৮ শতাংশ বিড়ি ব্যবহার করেন। সিগারেট ব্যবহারের সংখ্যা ১৪ শতাংশ। একটা সিগারেটের গড় দাম বিড়ির দামের ১০ গুণেরও বেশি। বাজেটে বিড়িতে কর না বসলে বিড়ি বিক্রি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’