প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় বিধাননগর ময়ূখ ভবনে বিশেষ আদালতে বিচারক মনোজজ্যোতি ভট্টাচার্যের এজলাসে সাক্ষ্য দিলেন দু’জন।
বুধবার দুপুর ১২টার কিছু পরে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী ছিলেন এলাকারই বাসিন্দা এবং স্থানীয় ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ প্রভাস কর্মকার।। সরকারি কৌঁসুলি অসীমকুমার দত্তের জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি জানান, ঘটনার রাতে তিনি ফুলবাড়ি ফুটবল মাঠে উপস্থিত ছিলেন। ক্লাবের সরস্বতী পুজো উদ্বোধন করে সত্যজিৎ মঞ্চের সামনে চেয়ারে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখছিলেন। রাত ৮টা নাগাদ তাঁর সঙ্গে কথা বলার জন্য পা বাড়িয়েই প্রভাস দেখেন সুজিত মণ্ডল বন্দুক হাতে সত্যজিতের পাশে দাঁড়িয়ে। তখনই অভিজিৎ পুন্ডারি কোমর থেকে বন্দুক বার করে সত্যজিতের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তিনি চেয়ার থেকে পড়ে যান। এরপর তারা রাস্তার দিকে ছুটে পালায়। ২০১৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, শনিবার সরস্বতী পুজোর আগের রাতে হাঁসখালিতে বাড়ির কাছেই মাজিদপুর দক্ষিণপাড়ার ফুলবাড়ি ফুটবল মাঠে ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের অনুষ্ঠান চলার সময়ে খুন হন সত্যজিৎ। সাক্ষ্যে প্রভাস জানান যে তিনি, মিলন সাহা, সুমিত বিশ্বাস এবং সুজল বিশ্বাস চার জন ছুটে গিয়ে সত্যজিৎকে ধরাধরি করে তাঁর গাড়িতে তুলে দেন। বাকিরা সত্যজিৎকে নিয়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি যাননি। পরে সত্যজিতের মৃত্যুর খবর আসার পর রাত ১০টা নাগাদ তিনি হাসপাতালে যান। ভোর ৪টের সময়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে তিনি ফের ফুলবাড়ি মাঠে যান। প্রচুর পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছিল। মাঠ সংলগ্ন রাস্তার ধারে দাস বিল্ডার্সের কাছ থেকে পুলিশ একটি বন্দুক উদ্ধার করে এবং সেটিকে ‘সিজ’ অর্থাৎ বাজেয়াপ্ত করে। সেই ‘সিজার লিস্ট’-এ তিনি স্বাক্ষর করেন।
এর পর সরকারি কৌঁসুলি একটি বন্দুক দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, এটিই সেই বন্দুক কিনা। সম্মতি জানিয়ে প্রভাস বলেন, ওই রকম আগ্নেয়াস্ত্রই তিনি সুজিত এবং অভিজিতের হাতে দেখেছিলেন। তাঁকে একটি সবুজ প্লাস্টিকের চেয়ার দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, সেই রাতে সত্যজিৎ ওই চেয়ারে বসেছিলেন কিনা। প্রভাস সম্মতি জানান। তাঁকে একটি কালো রঙের ত্রিপল দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় ওই ত্রিপলের উপরেই সত্যজিৎ পড়ে গিয়েছিলেন কিনা। তাতেও তিনি সম্মতি জানান।
দ্বিতীয় সাক্ষী, ‘আমরা সবাই’ ক্লাবের সদস্য রবি সাহা আদালতে জানান, তিনি সত্যজিতের ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ দেখেন, অভিজিৎ পুন্ডারি বন্দুক উঁচিয়ে সত্যজিৎকে গুলি করল। পাশেই ছিল বন্দুক হাতে সুজিত মণ্ডল। গুলি খেয়ে সত্যজিৎ পড়ে যেতেই তারা রাস্তার দিকে পালাতে শুরু করে। রবি এবং আরও কয়েক জন তাদের তাড়া করে। কিন্তু অভিযুক্তেরা রাস্তা পার হওয়া মাত্র একটি লরি চলে আসে। লরিটি চলে যাওয়ার পর তাদের আর ধরা যায়নি। আজ, বৃহস্পতিবার ফের এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ারকথা রয়েছে।