তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই নেতাকে মারধর করার অভিযোগে ঘটনার এক সপ্তাহ পরে এক সিপিএম কর্মী ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও সিপিএমের দাবি, ভোটের দু’দিন আগে হুমকি দিতে এসে চড়াও হয়েছিল টিএমসিপি-র লোকজন। তখনই ধস্তাধস্তি হয়। কিন্তু মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের দু’জনকে ধরেছে।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম কালিপদ সরকার ও কমল সরকার। মঙ্গলবার রাতে চাকদহের বিষ্ণুপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের বাড়ি চাকদহ পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেবেন্দ্রপল্লি এলাকায়। স্থানীয় চটকাতলায় কালিপদবাবুর একটা সেলুন আছে।
নদিয়া জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার পর দু’জনে পলাতক ছিল। ধরার জন্য কয়েক বার বাড়িতে হানা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, পাওয়া যায়নি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এ দিন ওদের গ্রেফতার করা হয়।’’
তৃণমূলের অভিযোগ, ১৯ এপ্রিল রাত ১১টা নাগাদ দলীয় কাজকর্ম সেরে চাকদহের রবীন্দ্রপল্লিতে বাড়ি ফিরছিলেন নদিয়া জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনীপ রায় এবং চাকদহ শহর সভাপতি তনয় সিংহ। পথে দেবেন্দ্রপল্লিতে কয়েক জন তাদের মারধর করে। কালিপদবাবু ও তাঁর ছেলে কমল-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এত দিনে কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে গত রবিবার রাতে চাকদহ থানার সামনে প্রতিবাদ সভা করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাতেই পুলিশের উপরে চাপ বাড়ে। তনয়ের দাবি, ”সে দিন যারা আমাদের আক্রমণ করেছিল, এরা তাদের অন্যতম। বাকিদেরও গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।“ সিপিএমের চাকদহ ১ লোকাল সম্পাদক স্বর্ণেন্দু দত্ত অবশ্য পাল্টা বলেন, ”ওরা আদৌ কাউকে মারতে যায়নি। মিথ্যা অভিযোগ।’’ তাঁর দাবি, মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের লোকেরাই তাঁদের কর্মীদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভয় দেখাচ্ছিল। হুমকি দিচ্ছিল যাতে কেউ পোলিং এজেন্ট না হয় বা ভোটের দিন বুথে না যায়। কালিপদ সরকারের বাড়িতেও তারা গিয়েছিল।
স্বর্ণেন্দুর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা বাড়িতে ঢুকে মারধর করতে গেলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সেই সময়ে পড়ে গিয়ে অনীপের মাথায় আঘাত লাগে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ওকে কেউ মারতে যায়নি। মিথ্যা মামলায় ওদের ফাঁসানো হয়েছিল, যাতে ওরা ভোট দিতে যেতে না পারে।“
যদিও সিপিএমের তরফে এই মর্মে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। চাকদহ থানার দাবি, নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই বাবা-ছেলেকে ধরা হয়েছে। বাকিদেরও খোঁজ চলছে। তৃণমূলই সে রাতে হামলা চালিয়েছিল, এমন অভিযোগ তারা পায়নি।