শুভেন্দু অধিকারীর দেখানো পথ ধরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার প্রবণতার মধ্যে উলটপুরাণ। রবিবার তৃণমূলে যোগ দিলেন চাঁদেরঘাট পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান ও উপপ্রধান।
এ দিন বিকেলে নদিয়া জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি জুলফিকার আলি খানের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা নেন চাঁদেরঘাট পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধান প্রতিমা বিশ্বাস এবং উপপ্রধান দিলীপ মণ্ডল। বিধানসভা নির্বাচনের আগে পলাশিপাড়া কেন্দ্রের অন্তর্গত চাঁদেরঘাটে এই দলবদলের ঘটনা নিঃসন্দেহে বিজেপির অন্দরে কোন্দলের ছবিটাই ফের প্রকাশ্যে এনে দিল। এই নিয়ে স্থানীয় বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে যথেষ্ট ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে চাঁদেরঘাট পঞ্চায়েতে বিজেপি ছয়, তৃণমূল ছয়, সিপিএম একটি আসন পেয়েছিল। পরে বিজেপি-সিপিএম জোট করে পঞ্চায়েত গঠন করে বিজেপি। কিন্তু প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে থাকে পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশের। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিমা ও দিলীপ বিজেপির প্রধান-উপপ্রধান হওয়া সত্ত্বেও বিরোধী দলনেতা, তৃণমূলের তুহিন মণ্ডলের কথা মতো কাজ করতেন। বিশেষত প্রধানের বিরুদ্ধেই এই অভিযোগ ছিল।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, কিছু মাস আগে বিরোধী দলনেতার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল প্রধানকে। এর পরে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে প্রতিমার। বিভিন্ন সময় একাধিক দাবি ও অভিযোগ নিয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য ও কর্মী-সমর্থকেরা। পঞ্চায়েত ঘেরাও করে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। গত শনিবার ওই এলাকার একটি বিল সংস্কারকে কেন্দ্র করে প্রধানের বিরুদ্ধে সরব হন এলাকার বিজেপি ও সিপিএম কর্মীরা। বিক্ষোভ দেখিয়ে কাজ বন্দ করে দেওয়া হয়। এর পরেই এ দিন এক পথসভায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলেন দু’জনে।
ওই পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য সমিতা মণ্ডলের দাবি, “প্রধান এবং উপপ্রধান যে দুর্নীতি এত দিন ধরে চালিয়ে এসেছেন বিরোধী দলনেতাকে সঙ্গে নিয়ে, তারই ফলশ্রুতি এই ঘটনা।” তবে পঞ্চায়েত প্রধান প্রতিমা বিশ্বাস পাল্টা বলেন, “বিজেপির কর্মীরা লোভী। মেয়েদের সম্মান দিতে জানে না। তৃণমূলের হাত ধরে উন্নয়ন হচ্ছে বলেই এই দলে যোগ দিলাম।” প্রায় একই কথা বলেন উপপ্রধান দিলীপ মণ্ডলও।
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশুতোষ পাল বলেন, “স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, “প্রধান এবং উপপ্রধানের যোগদানে ওই এলাকায় দল আরও শক্তিশালী হল।” নিজস্ব চিত্র