Indian Railways

লোকালে প্রযুক্তি অধরা, কুয়াশায় ট্রেন চলাচল দেরিতে

বুধবার সকাল থেকে কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল নদিয়ার আকাশ। দিনভর সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে সকাল থেকেই নির্দিষ্ট সময়ের অনেক দেরিতে ট্রেন চলাচল করায় ভোগান্তির শিকার হন নিত্যযাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৬
Share:

সকাল সাড়ে ১০টাতেও সরেনি কুয়াশা। বুধবার রানাঘাটে। —নিজস্ব চিত্র।

কুয়াশার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের থেকে দেরিতে ট্রেন চলাচল করে। গত কয়েক বছরে ওই ঘটনায় শীতের সময়ে ‘নিয়ম’ হয়ে উঠেছে। সেই নিয়মের বদল ঘটাতে বছর চারেক আগে ‘ফগ পাস’ নামে বিদেশি সংস্থার যন্ত্রের ব্যবহার শুরু করে ভারতীয় রেল। দূরপাল্লার ট্রেনের ইঞ্জিনগুলিতে সেই যন্ত্রের ব্যবহার হলেও লোকাল ট্রেনে পুরোপুরি সেই প্রযুক্তির ব্যবহার হয়নি। ফলে কুয়াশা থাকলেও সময়ে ট্রেন চলার বিষয়টি রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই।

Advertisement

বুধবার সকাল থেকে কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল নদিয়ার আকাশ। দিনভর সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে সকাল থেকেই নির্দিষ্ট সময়ের অনেক দেরিতে ট্রেন চলাচল করায় ভোগান্তির শিকার হন নিত্যযাত্রীরা। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন লালগোলা-শিয়ালদহ ডাউন ভাগীরথী এক্সপ্রেস নির্দিষ্ট সময়ের থেকে প্রায় আধঘণ্টা দেরিতে শিয়ালদহ পৌঁছেছে। পাশাপাশি রানাঘাট, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, গেদে শাখার লোকাল ট্রেনও এ দিন নির্দিষ্ট সময়ের থেকে আধ ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করে।

রেল সূত্রে খবর, ২০১৮ সাল নাগাদ প্রথম বার পরীক্ষামূলক ভাবে ‘ফগ পাস’ যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয় ভারতীয় রেল। জানা গিয়েছে, ওই যন্ত্রের সঙ্গে লাগানো রয়েছে একটি এলইডি স্ক্রিন। স্ক্রিনের সাহায্যে চালক ঘন কুয়াশার মধ্যেও বুঝতে পারবেন সামনের সিগন্যাল লাল নাকি সবুজ। লেভেল ক্রসিংয়ে রেলগেট খোলা রয়েছে নাকি বন্ধ রয়েছে। একই লাইনে কতটা দূরত্বে রয়েছে অন্য ট্রেন, তা-ও ওই যন্ত্রের সাহায্যে বোঝা সম্ভব। শিয়ালদহ মেন শাখায় লোকাল ট্রেন চালকদের অনেকেই বলেন, ‘‘মূলত এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার যন্ত্রের ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ লোকাল ট্রেনে এই ধরনের কোনও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নেই।’’

Advertisement

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ ডিভিশনের মেন শাখায় বর্তমানে আট-নয়টি ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির (আইসিএফ) তৈরি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। সেই ট্রেনে নতুন এই প্রযুক্তির ব্যবহার রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই ঘন কুয়াশায় সিগন্যালের দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় চালকেরা রেলের নির্দেশ মতো ট্রেনের গতি প্রতি ঘণ্টায় শূন্য থেকে ষাটের বেশি তুলতে পারছেন না। ফলে শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন দিনে স্বাভাবিক ভাবে দেরিতে চলছে লোকাল ট্রেন।

বুধবার ভোর ৪টে ৫২ মিনিটের ডাউন গেদে শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনে রানাঘাট থেকে শিয়ালদহে যাবেন বলে উঠেছিলেন রমেশ বিশ্বাস। ট্রেন সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে শিয়ালদহে ঢোকার কথা থাকলেও ৬টা ৪০ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছয় ট্রেন। ওই যাত্রীর কথায়, ‘‘জরুরি কাজে নিউ জলপাইগুড়ি যাব বলে কাকভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ধরার কথা থাকলেও, ওই ট্রেনটিও এক ঘণ্টারও বেশি সময় পর গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।’’

সব লোকাল ট্রেনগুলোতে কেন ‘ফগ পাস’ যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে না? বিষয়টি
নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘ধাপে ধাপে সব ট্রেনেই ওই প্রযুক্তির ব্যবহার হবে। তা ছাড়া যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এই সময়ে অতি কুয়াশার কারণে চালকেরা ট্রেনের গতি কম রাখছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement