ইঁদুরের দৌরাত্ম্যে দিঘির পাড়ে থমকে আছে টয়ট্রেন

টয়ট্রেন আর চলে না। কচিকাঁচারা মনখারাপ করে বাড়ি ফিরে যায়।

Advertisement

ইন্দ্রাশিস বাগচী

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:২০
Share:

অনাদরে পড়ে রয়েছে টয়ট্রেনটি। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র

বিকেল হলেই ধোঁয়া উড়িয়ে ছুটত টয়ট্রেন। কচিকাঁচাদের হইচইয়ে গমগম করত লালদিঘির পাড়। ভিড় এখনও হয়। তবে সেই টয়ট্রেন আর চলে না। কচিকাঁচারা মনখারাপ করে বাড়ি ফিরে যায়। বহরমপুর শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে সুভাষ সরোবর। শহরবাসীর কাছে যা লালদিঘি নামে পরিচিত। সন্ধ্যা নামলেই বহু মানুষ লালদিঘির পাড়ে এসে ভিড় করেন। ছোটোদের মনোরঞ্জনের জন্য প্রায় ১০ বছর আগে লালদিঘিতে আনা হয়েছিল একটি টয়ট্রেন। কিন্তু বছরখানেক থেকে সেই টয়ট্রেনটি বন্ধ।

Advertisement

বহরমপুর পুরসভা সূত্রে খবর, লালদিঘিতে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়েছে। ইঁদুরের দৌরাত্ম্যে লালদিঘির পাড়ের মাটি বসে যাচ্ছে। ফলে ওই অংশে আর টয়ট্রেন চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

সন্ধ্যা ঘনালেই যখন আলোর রোশনাইয়ে সেজে ওঠে লালদিঘির একাংশ, তখন অপর অংশে অন্ধকার কারশেডের নীচে দাঁড়িয়ে থাকে টয়ট্রেনটি।

Advertisement

সম্প্রতি বহরমপুর পুরসভার উদ্যোগে সৌন্দর্যায়নের কাজ হলেও অনাদরে পড়ে রয়েছে টয়ট্রেনটি। এক সময় লালদিঘির পিছনের অংশে প্রায় ৩০০ মিটার পর্যন্ত চলত টয়ট্রেনটি। চার কামরার এই টয়ট্রেনটির আসন সংখ্যা ৮০। সরোবর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, আনুমানিক ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে লালদিঘিতে টয়ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই টয়ট্রেনের ভবিষ্যৎ এখন অথৈ জলে।

বহরমপুরের বাসিন্দা অজয় হালদার বলছেন, ‘‘একটা সময় লালদিঘিতে এলেই শুনতে পাওয়া যেত টয়ট্রেনের আওয়াজ। বাচ্চারা বেশ উপভোগ করত। কিন্তু এখন সে সব অতীত।’’ লালবাগ থেকে বহরমপুরে বেড়াতে এসে এক বার লালদিঘিতে ঢুকেছিলেন শ্যামল সেন। তিনি বলেন, ‘‘টয়ট্রেন দেখেই বাচ্চা তাতে ওঠার জন্য জেদ করে। ওকে কোনও ভাবেই বোঝাতে পারিনি যে ট্রেনটি আর চলে না। কবে যে টয়ট্রেন আবার চলবে, কে জানে!’’

যে অংশে টয়ট্রেনের ট্র্যাক রয়েছে সেখানে এখন ঘন জঙ্গলে। টয়ট্রেনটির উপরে জমেছে পুরু ধুলো। তবে টিকিট কাউন্টারের দেওয়ালে স্পষ্ট হস্তাক্ষরে এখনও লেখা রয়েছে— টয়ট্রেনের টিকিটের মূল্য ৫ টাকা, দু’বছরের ঊর্ধ্বে টিকিট লাগবে। যা দেখএ অনেকেই হাসতে হাসতে প্রশ্ন করছেন, ‘‘যেখানে টয়ট্রেনই চলছে না, তার আবার ভাড়া কিসের?’’

যদিও পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, টয়ট্রেন পুনরায় চালু করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ পুরসভার তহবিলে নেই। বহরমপুর পুরসভার এগ্্জিকিউটিভ অফিসার মহম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘‘টয়ট্রেন পুনরায় চালু করতে গেলে প্রথমেই ওই দিঘির পাড় সংস্কার করা দরকার। তার জন্য কম করে তিন লক্ষ টাকা দরকার। টয়ট্রেন পরিষেবা চালু করতে গেলে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। এত টাকা পুরসভার তহবিলে নেই। সেই কারণেই কাজ থমকে রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement