হাজারদুয়ারির সিঁড়ি।
জানুয়ারি মাস পর্যটনের ভরা মরসুম। তখন সবে পর্যটকেরা ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন নবাবি শহর মুর্শিদাবাদে। কিন্তু করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রাজ্য সরকারের নির্দেশে গত ৩ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত পর্যটনকেন্দ্র। যার জেরে পর্যটকেরা হোটেলের বুকিং বাতিল করলেও বুকিংয়ের টাকা হোটেলে জমা রেখেছিলেন। মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই পুনরায় তাঁরা হোটেল বুকিং শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে নতুন করেও অনেকেই বুকিং করছেন। এ দিন বিভিন্ন জায়গা থেকে ঐতিহাসিক শহরে খান তিনেক বাসে এবং ৩০ টি ছোট গাড়ি করে পর্যটকরা এসেছিলেন। তাঁরা এদিন হাজার দুয়ারি থেকে শুরু করে মতিঝিল পার্ক, কাঠগোলা বাগান-সহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখেছেন।
মরসুমের শেষের দিকে হলেও ফের পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় আশার আলো দেখছেন মুর্শিদাবাদের পর্যটন ব্যবসায় যুক্ত থাকা লোকজন।
মুর্শিদাবাদ হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক স্বপন দাস বলেন, ‘‘যখন পর্যটকের ঢল নামতে শুরু করেছিল ঠিক সে সময় রাজ্য সরকার পর্যটন কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেয়। যার জেরে পর্যটকেরা লালবাগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। যার জেরে আমরা ক্ষতির মুখে পড়ি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ দিন থেকে পর্যটন কেন্দ্র খোলার ফলে লোকজন বুকিং শুরু করেছে।’’
মুর্শিদাবাদ শহরের ইমামবাড়ার পিছনের পাড়ার বাসিন্দা বিপদভঞ্জন বিশ্বাস মুর্শিদাবাদ শহরে টাঙ্গা গাড়ি চালান। তাঁর দাবি, ‘‘এ দিন পর্যটন কেন্দ্র খোলায় একটি দলকে ঘোড়ার গাড়িতে ঘোরানোর জন্য পেয়েছিলাম। আজকে যা আয় হল তাতে ঘোড়ার খাবারের দামই উঠবে না। তবুও পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় খুশি হয়েছি।’’
মুর্শিদাবাদের সবজি কাটরা এলাকার বাসিন্দা সুদর্শন দেবনাথ কাটরা মজসিদে পর্যটকদের গাইডের কাজ করেন। সুদর্শন জানান, ‘‘আশা করছি এবারে সুদিন ফিরবে।’’ মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্র খোলায় আমরা খুশি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পর্যটন কেন্দ্র খোলার ফলে এদিন থেকে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। আমরা আশা করছি পর্যটকে ফের আসবেন।’’ নদিয়ার করিমপুর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছিলেন সঞ্জীব মণ্ডল। এদিন সঞ্জীব জানান, ‘‘সোমবার টিভিতে দেখি এ দিন থেকে পর্যটন কেন্দ্র খুলছে। তাই ঘুরতে এসেছি।’’