প্রতীকী ছবি।
এ বার গ্রামীণ রাস্তার উপর টোল ট্যাক্স বসাচ্ছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ।এই প্রথম। জেলার ১৮টি ব্লকের ২৮টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপর ক্রমান্বয়ে বসানো হবে এই টোল। জেলার রাস্তাঘাট সংস্কারে স্বনির্ভর হতে চাইছে জেলা পরিষদ। উদ্দেশ্য সড়ক সংস্কারে নিজস্ব আলাদা একটা ফান্ড গড়ে তোলা।
বছরে টোল থেকে প্রায় ৫.৯৪ কোটি টাকা আয় সম্ভব হবে বলে পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা জুনে একটি প্রস্তাব পাঠায় জেলা পরিষদকে। সব ক’টি সড়কই প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার বরাদ্দ অর্থে নির্মাণ করা হয়েছে আগেই। নিয়ম মতো সড়কগুলি তৈরির পর থেকে ৫ বছর সেটি দেখভালের দায়িত্ব রাস্তার নির্মাণকারী সংস্থার। কিন্তু জেলায় এমন বহু রাস্তা রয়েছে, দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি। ফলে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এই অবস্থা বদলাতে চায় জেলা পরিষদ। আর তা থেকেই পণ্যবাহী যানে টোল বসানোর ভাবনা।
যে ২৮টি রাস্তাকে এই টোল ট্যাক্সের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলির মধ্যে আছে নবগ্রামের ও নওদার ৩ টি করে, ফরাক্কা, খরগ্রাম, বড়ঞা, ডোমকল, হরিহরপাড়া ও রানিনগর ১ ব্লকে ২টি করে রাস্তা। ১টি করে রাস্তা টোলের আওতায় আসছে সুতি ২, কান্দি, বেলডাঙা ১ ও ২, রঘুনাথগঞ্জ ১ও ২, সাগরদিঘি, লালগোলা, ভগবানগোলা ১ ও বহরমপুর ব্লকে।
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর যে রাস্তা বানায় তাতে খরচ হয় প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ২ কোটি টাকা করে। রাস্তার ভার বহন ক্ষমতা থাকে প্রায় ৭০/৮০ টন পর্যন্ত। আর জেলা পরিষদ যে সব রাস্তা তৈরি করে সেই সব গ্রামীণ রাস্তা গড়তে বরাদ্দ থাকে প্রতি কিলোমিটারে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা। সেই সব দুর্বল গ্রামীণ রাস্তায় ঢুকে পড়ছে পাথর বোঝাই ৭০ টনের ট্রাক। রাস্তা তৈরির পরই দু’দশ দিনেই ভেঙে যাচ্ছে বহু গ্রামীণ রাস্তা। ফলে গ্রামীণ রাস্তা টিকছে না।’’
রাজীব জানান, পঞ্চায়েতের বিধি নিয়মে যেহেতু জেলা পরিষদকে সে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তাই আইনি জটিলতাও নেই। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষ চান ভাল রাস্তা। ভারি যানের জন্যই গ্রামীণ রাস্তাগুলি খারাপ হচ্ছে। আবার ভারি যান না চলতে দিলেও মাল পত্রের জোগান ব্যাহত হবে। তাই বহু ভেবে চিন্তেই টোল বসানো হচ্ছে মালবাহী গাড়ির চলাচলে। কোনও বাইক, ব্যক্তিগত গাড়িকে সে টোল দিতে হবে না। টোল বসানো হয়নি কোনও সরকারি গাড়ি ও কৃষি পণ্যবাহী গাড়ির উপরও। কাজেই গ্রামের বাসিন্দা ও চাষিদের উপর কোনও চাপ পড়বে না। উল্টে তাঁরা আরও ভাল রাস্তাঘাট পাবেন।’’