তৃণমূল বিধায়ক শাহিনা মমতাজের সঙ্গে মেয়ে নাজমিন খাতুন। —নিজস্ব চিত্র।
দলের তরফে টিকিট পাননি। তাই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন নির্দল হিসেবে। কিন্তু মঙ্গলবার বিধায়ক মায়ের সঙ্গে বিডিও অফিসে এসে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেন পঞ্চায়েত সমিতির নির্দল প্রার্থী নাজমিন খাতুন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর কান্যায় ভেঙে পড়ে নাজমিন বলেন, ‘‘এত অসম্মানিত কখনও হইনি।’’ বিধায়ক মা মেয়েকে সান্ত্বনা দিতে দিতে বলেন, ‘‘দলের স্বার্থে এই আত্মত্যাগ।’’
পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট বিলি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে অসন্তোষ চলছে। কখনও কখনও সেই অসন্তোষ দলের বাঁধ ভেঙে বাইরে চলে আসছে। টিকিট না পাওয়া নেতা-কর্মীরা সোজা দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ করছেন। কোথাও এই ‘বিদ্রোহী’দের তালিকায় রয়েছেন স্বয়ং বিধায়কেরা। যেমন, ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। অন্য দিকে, তৃণমূল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দল যাকে প্রার্থী করছে, তাকেই মেনে নিতে হবে। দলের কেউ যাতে নির্দল হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেন, তা নিয়ে আবেদন করা হচ্ছে। এই বার্তার পরই নওদার তৃণমূল বিধায়ক শাহিনা মমতাজের মেয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।
মুর্শিদাবাদের যে চার বিধায়ক দলের বেছে দেওয়া প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী দিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম নওদার বিধায়ক শাহিনা। দলের ঘোষিত প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও নওদা পঞ্চায়েত সমিতির ১৫ নম্বর আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে নির্দল হিসেবে লড়ার বার্তা দেন বিধায়কের মেয়ে নাজমিন। কিন্তু মঙ্গলবার রণেভঙ্গ দিয়েছেন তাঁরা। বেলা দেড়টা নাগাদ বিধায়ক মাকে সঙ্গে নিয়েই ব্লক অফিসে গিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন নাজমিন। মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেন কেন? নাজমিনের মন্তব্য, ‘‘আমাদের কোনও প্রার্থীই যেখানে প্রতীক পাচ্ছেন না, সেখানে আমি একা কেন প্রতীক নিয়ে লড়ব? আমার মা আমার জন্য লড়েছেন, এই অপবাদ নিজেদের গায়ে লাগতে দেব না।’’ নাজমিনের সংযোজন, ‘‘দলের কাছ থেকে এতটা অসম্মান আগে কখনও পাইনি।’’ অন্য দিকে নওদার বিধায়ক বলেন, ‘‘দলীয় নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে দলের জন্য আত্মত্যাগ করল মেয়ে। ওর ইচ্ছাকে আমি সম্মান জানাই।’’