নবগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক কানাই মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
আইনি জালে জড়িয়ে থাকা সাগরদিঘির একটি বিলে মাছ ধরার অনুমতি চাইতে গিয়ে থানায় গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন বহু মৎস্যজীবী। অভিযোগ, থানা থেকে বেরোতেই নিজের দলের কর্মীদের হাতে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন নবগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক কানাই মণ্ডল। ভাঙচুর করা হয়েছে তাঁর গাড়িও। সোমবার রাতে সাগরদিঘির এই ঘটনায় ওই বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত সাহার অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। তাঁদের সঙ্গে সমাজবিরোধীরাও ছিল বলে দাবি।
সূত্রের খবর, সাগরদিঘির দামেশ বিলে মাছ ধরা চালু করার জন্য কানাইয়ের দ্বারস্থ হয় মৎস্যজীবীদের এক গোষ্ঠী। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে এ নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার রাতে সাগরদিঘি থানায় যান কানাই। স্থানীয়দের অভিযোগ, থানা এলাকায় পৌঁছতেই সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহার অনুগামীরা কানাইকে কার্যত ঘিরে ধরে ঝামেলা পাকান। তাঁদের সঙ্গে সমাজবিরোধীরাও ছিল। থানায় বিধায়কের আসার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কাবিলপুর এলাকা থেকে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ সেখানে জড়ো হয়। কানাইয়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন অনেকে। বিধায়ক থানা থেকে বার হলে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়। তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভের পাশাপাশি ধাক্কাধাক্কিও করা হয় বলে দাবি। এই এলাকায় তিনি কেন এসেছেন, তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলতে থাকেন বিক্ষুব্ধরা। তিনি যাতে সেখানে কখনও না আসেন, এমন হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। বিধায়কের গাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে বিধায়ককে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে দেন পুলিশকর্মীরা। বিক্ষোভের মাঝেই এলাকা ছাড়েন কানাই।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সাগরদিঘির দামেশ বিলে মাছ ধরা নিয়ে এলাকার মৎস্যজীবীদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘ দিনের বিবাদ। যা নিয়ে অতীতে বড়সড় ঝামেলা হয়েছে। মাছ ধরা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় বিল এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। দামেশে বিলে মাছ ধরার বৈধ অধিকার কার, তা নিয়ে মামলাও চলছে। আদালতে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিলে মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে অনড় স্থানীয় প্রশাসন। তবে অরিন্দম হালদার নামে এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে এই বিলে মাছ ধরার অনুমতি নেই আমাদের। যার জেরে রুজিরুটিতে টান পড়েছে। বাধ্য হয়ে বিধায়কের কাছে দরবার করেছিলাম। তবে কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থে ইচ্ছে করেই গন্ডগোল পাকিয়েছে।’’
মুর্শিদাবাদের এই দুই বিধায়কের গোষ্ঠীর এলাকা দখলের লড়াইয়ের জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি অনেকের। ঘটনার পর থেকে থমথমে গোটা এলাকা। বিল চত্বরে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ বাহিনী।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।