তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। —নিজস্ব চিত্র।
শমসেরগঞ্জ থানার ওসির বিরুদ্ধে ‘সরকার বিরোধী’ কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ করলেন তৃণমূলের বিধায়ক। শুধু তাই নয়, তাঁর অভিযোগ, এলাকার সমাজবিরোধী কাজে ইন্ধন রয়েছে ওই পুলিশ আধিকারিকের। ভোটের মুখে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলামের এই বিবৃতিতে শোরগোল জেলা রাজনীতিতে। কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। যদিও বিধায়কের এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতেই নারাজ জেলা পুলিশ প্রশাসন।
ঘটনার সূত্রপাত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীকে গ্রেফতার করা নিয়ে। একটি সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী পাকুড় স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীকে আটক করে পুলিশ। এমনকি, এক পুলিশ আধিকারিক এবং থানার গাড়ির চালক এমনকি, চার সিভিক ভল্যান্টিয়ার তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। বিধায়কের দাবি, কয়েক জন শ্রমিককে ট্রেনে তুলে দিয়ে দোগাছি সাকারঘাট ডিবিএসের রাস্তা দিয়ে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন দোগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যর স্বামী ইউসুফ শেখ। ইউসুফ শ্রমিকদের বিভিন্ন জায়গায় কাজে পাঠানোর কাজ করেন। অর্থাৎ, লেবার কন্ট্রাক্টর। তাঁকে ওই দিন শমসেরগঞ্জ থানার এএসআই-এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ‘তুচ্ছ কারণে’ হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। এমনকি, পুলিশের মারের চোটে ওই যুবকের চোখের পাশে এবং শরীরের নানা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেই দাবি করেছেন বিধায়ক এবং আক্রান্তের পরিবার। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে শমসেরগঞ্জের ডাকবাংলো বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায় সাংবাদিক বৈঠক করে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিধায়ক। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করার পাশাপাশি পুলিশের কর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক।
অন্য দিকে, বিধায়ক আমিরুল এবং আক্রান্তের পরিবারের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ইউসুফ শেখ নামে ওই ব্যক্তি মত্ত অবস্থায় মোটর বাইক চালাচ্ছিলেন। পুলিশকে দেখে অযথা ‘পাসিং লাইট’ দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশের গাড়ির চালককে গালাগাল করেন। পুলিশের উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তার পরেই তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। পরের দিন ট্র্যাফিক আইনে জরিমানা করে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শমসেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল বলেন, ‘‘সরকারবিরোধী কাজ করছেন শমসেরগঞ্জ থানার ওসি প্রশান্ত ঘোষ। সমাজবিরোধী কাজে তিনি ইন্ধন দিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বেই এই থানা এলাকায় নানা সমাজবিরোধী কাজ চলছে।’’ বিধায়কের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায়ের প্রতিক্রিয়া নেয় আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি বলেন, ‘‘এ রকম অভিযোগের সারবত্তা আছে কি না, জানি না। যিনি করেছেন, তিনিই এর ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। পুলিশ সমাজকে অপরাধ মুক্ত করে। আর কোনও মন্তব্য করব না।’’