মাস্ক পরাতে সচেতন করছেন মন্ত্রী আখরুজ্জামান। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকাকরণের জন্য মহিলাদের দীর্ঘ লাইন দেখেই গাড়ি থেকে নামলেন তিনি। দেখলেন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে শতাধিক গ্রামীণ মহিলা। কারও কোলে সদ্যোজাত। কিন্তু মুখে মাস্ক নেই বেশির ভাগেরই। তাঁদের হাতে তুলে দিলেন মাস্ক।
রাজ্যের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান এরপরই এগিয়ে গেলেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছে। রোদের মধ্যে টেবিল চেয়ার পেতে সাপ্তাহিক ইম্যুনাইজ়েসনের কাজ করছিলেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। মন্ত্রীকে দেখে উঠে দাঁড়াতেই তাদের সামনেই ক্ষোভ উগরে দিলেন মন্ত্রী, “এ কীরকম ব্যাপার? আপনারা সরকারের স্বাস্থ্য কর্মী, অথচ টিকাকরণ চলছে মাস্ক ছাড়াই? মানুষকে মাস্ক পরে আসতে বাধ্য করছেন না কেন? লোকজন তো এই এলাকায় সচেতন নন, কিন্তু সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে আপনারা তো সচেতন? সংক্রমণ যে ভাবে ছড়াচ্ছে তাতে সকলেই আতঙ্কে আছেন। একজন মা বা শিশু যদি আক্রান্ত হন, তার পরিণামটা তো ভাবতে হবে? ভবিষ্যতে মাস্ক ছাড়া এ ধরনের শিবির চালাবেন না, প্লিজ।”
এ দিন করোনার সচেতনতা দেখতে মন্ত্রী গিয়েছিলেন সীমান্ত লাগোয়া পদ্মাপাড়ের গ্রাম গিরিয়ায়। বাজারে ঢুকতেই বোঝা গেল সচেতনতার বালাই মাত্র নেই। মেরে কেটে ৫ শতাংশ লোকের মুখেও মাস্কের দেখা নেই। দু’দিন আগে মিঠিপুরে গিয়ে যা নজরে এসেছিল, এ দিনের গিরিয়ার সঙ্গে তার কোনও ফারাক নেই।
আখরুজ্জামান বলছেন, “মাস্ক কেনার পয়সা নেই তা কিন্তু নয়। বাড়ির কাপড় দিয়েও তো মাস্ক তৈরি করা যায়। করোনা নিয়ে সবাই আতঙ্কে আছে। কিন্তু করোনা থেকে বাঁচার প্রধান পথ হচ্ছে মুখে মাস্ক লাগানো এটাই বুঝছেন না মানুষ। প্রত্যেক গ্রামে তো পঞ্চায়েত সদস্যরা আছেন। তাঁরাও তো নিজেরা এক ঘণ্টা করে সময় দিতে পারেন মাস্ক পরার ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করতে। সবাই রাস্তায় নামুন। এই মুহূর্তে শুধু রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকেই প্রায় ৬০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে রয়েছেন। লক্ষণটা ভাল নয়। এটা কমাতে পারেন নিজের নিজের এলাকার মানুষেরাই শুধু মাস্ক ব্যবহার করে।”
গত দু সপ্তাহ ধরেই বিভিন্ন এলাকায় মাস্ক সচেতনতা তৈরি করতে ঘুরছেন তিনি নিজের এলাকায় প্রতিদিনই নিয়ম করে। কিন্তু কোনও ফল হচ্ছে কী? নিজেও জানেন না মন্ত্রী।
জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান বলছেন, “সংক্রমণ আটকানোই এখন সকলের প্রধান কাজ হওয়া উচিত। প্রতিদিন পঞ্চায়েত সদস্য থেকে দলের নেতারা তাঁদের এলাকায় বের হোন গ্রামবাসীদের মাস্ক পরাতে। এই মুহূর্তে দলের সমস্ত কর্মসূচি বন্ধ রাখুন। দু’দশ জন মিলেও জমায়েত নয়। সকলের একটাই কর্মসূচি হোক মানুষের মুখে মাস্ক পরানোর। বিরোধীরাও পথে নামুন।’’