নিহত বাপ্পা সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিপক্ষ বিজেপির এক কর্মীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের। নিহত যুবক নদিয়া জেলায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু ঘিরে শাসক-বিরোধী দ্বন্দ্ব যখন চরমে, সেইসময় এমনই বিপরীতধর্মী ছবি সামনে এল। এলাকায় দুই দলের মধ্যে রেষারেষি থাকলেও, কী এমন পরিস্থিতি দাঁড়াল যাতে গুলি ছুড়তে হল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় গয়েশপুর পুরসভার অন্তর্গত ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে। বিজেপির সংকল্প অভিযান ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে ধুন্ধুমার বাধে। সেইসময় অভিষেক পাল নামের এক তৃণমূল কর্মী বিজেপির অভীশ মজুমদারকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে জানা গিয়েছে। প্রতিবেশী অভীশকে বাঁচাতে সেইসময় ঝাঁপিয়ে পড়েন বাপ্পা সরকার নামের এক স্থানীয় তৃণমূল কর্মী। তাতে তিনি নিজেই গুলিবিদ্ধ হন।
সরাসরি বাপ্পার বুকে গুলি লাগে বলে জানা গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। বাপ্পা তৃণমূল-কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী বলেই এলাকায় পরিচিত। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, বাপ্পাকে গুলি করে খুন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু শটগানের গুলিতে, তদন্তভার সিআইডিকে
তবে গোটা ঘটনার জন্য তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছে বিজেপি। নদিয়া দক্ষিণে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অসীম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুন। এর আগেও একটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের দোষ ঢাকতে বিজেপিকে টানছে তারা।’’
বাপ্পার মৃত্যুর বিষয়টি কল্যাণী থানার অন্তর্গত গয়েশপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্ত নগরের অধীনে পড়ছে। দলের একনিষ্ঠ কর্মী হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে এ ভাবে বেঘোরে প্রাণ দিতে হল কেন, তার উত্তর খুঁজছেন বাপ্পার পরিবার। গোটা ঘটনায় এলাকাতেও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। গয়েশপুর টাউনের তৃণমূল সভাপতি সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী কীরণে খুন হয়েছেন বাপ্পা, তা তদন্ত করে দেখা হবে। তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত উনি। কিন্তু এই খুনের পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হবে।’’
আরও পড়ুন: বিদ্রোহের গর্ভগৃহে প্রাণ গেল আরও দুই কৃষকের, শোক নিয়েই চলছে বন্ধ
ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে বলে নদিয়া পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। তবে গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে এখনই কোনও কিছু খোলসা করতে নারাজ তারা।