—প্রতীকী ছবি
দলনেত্রীর মঞ্চে প্রবীণ নেতাদের শুরুতেই বক্তৃতা করতে এগিয়ে দিয়ে ঐক্যের বার্তা দিতে চাইলেন নদিয়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
দলের মধ্যে ক্রমশ প্রবীণ নেতাদের একাংশকে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে কিছু দিন গুঞ্জন রয়েছে তৃণমূলে। দলের সাংগঠনিক রদবদলের পরে অসন্তোষও বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তবে সোমবার দলনেত্রীর সভায় শাসক দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারা দেখাতেই মরিয়া ছিল শাসক দল।
সোমবার হবিবপুরে যে ছাতিমতলা মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেন, তা রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। ঘটনাচক্রে, এই নদিয়া দক্ষিণেই শাসক দলের মধ্যে কোন্দল বেশি। দলনেত্রীর নির্বাচনমুখী সভার আগে প্রস্তুতি পর্বে একাধিক প্রবীণ নেতাকে ‘ব্রাত্য’ করে রাখার অভিযোগ ছিল। তা নিয়ে নিজের ক্ষোভও গোপন রাখেননি শঙ্কর সিংহের মতো দাপুটে বিধায়ক। তবে এ দিন ছবিটা কিঞ্চিৎ পাল্টে যায়।
জনসভার শুরুতেই বক্তৃতা করতে ডাকা হয় প্রাক্তন জেলা সভাপতি, তেহট্টের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্তকে। তার পরে আসেন বিধায়ক এবং রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি শঙ্কর সিংহ, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ। অর্থাৎ যাঁরা বর্তমান জেলা নেতৃত্বের চক্ষুশূল বলে দলেরই নেতাকর্মীদের একাংশ মনে করেন। রাজ্যের কারামন্ত্রী এবং জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল বিশ্বাস বক্তৃতা করতে উঠে বলেন, “আমাদের মধ্যে কোনও অনৈক্য নেই। আমরা সবাই এক।” পরে মমতাও ‘পুরনো সাথী’ বলে সকলকে সম্বোধন করেন। সভার পরে শঙ্কর বলেন, “দলনেত্রীর বার্তাকে সামনে রেখে সব কর্মীরাই লড়াই করবেন।”
এ দিনের জনসভায় দলের বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের দেখা গিয়েছে। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে হোক বা অন্য যে কোনও প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী বিজেপির প্রতি আক্রমণ শানাতে হাততালিও পড়েছে। সভায় ভিড় ছিল ব্যাপক। অনেকেই মণ্ডপের ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি। তাঁরা ছাতিমতলা মাঠের বাইরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘোরাঘুরি করেছেন। রাস্তা দিয়ে সভাস্থলের দিকে যেতে দেখা গিয়েছে মতুয়াদের বিভিন্ন দলকে। দূরে বাস-গাড়ি রেখে হেঁটে আসতে দেরি হওয়ায় অনেকে সভাস্থলে ঢুকতে পারেননি।
আবার মমতার সভার শেষ দিকে অনেককে সভাস্থল থেকে বেরিয়ে যেতেও দেখা যায়। সেই তালিকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান যেমন ছিলেন, তেমনি প্রাক্তন কাউন্সিলরও ছিলেন। ছিলেন সধারন কর্মীরাও। ওই কর্মীরা জানিয়েছেন, মণ্ডপের ভিতরে তিলধারণের জায়গা না থাকায় দমবন্ধ হয়ে আসছিল। সেই কারণেই তাঁরা বেরিয়ে এসেছেন। মঞ্চ থেকে তাঁদের দেখে মমতা বলেন, “যারা বাইরে যেতে চাইছে, তাদের যেতে দিন। আটকাবেন না। ওরা অনেকক্ষণ এসেছে। এখনও বাইরে ৩০-৪০ হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাদের ভিতরে আসতে দিন।”
সভা শেষে মুখ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরে মঞ্চের সামনে উপস্থিত তৃণণূল কর্মীদের একাংশের হাতে একটি বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সাংবাদিক নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। যদিও কোথাও লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি।