প্রতীকী ছবি।
সাম্প্রদায়িকতার দুয়ো দিয়ে বিজেপি ছেড়ে জোড়াফুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন বিজেপির বহরমপুর উত্তর পুরমণ্ডলের প্রাক্তন সভাপতি বিশ্বরূপ ঘোষ। রাতারাতি শাসকদলের হয়ে নানান সভা-সমিতিতেও তাঁকে বক্তব্য রাখতে দেখা গিয়েছিল। কথা ছিল, তৃণমূলের নয়া জেলা কমিটিতে তাঁর অন্তর্ভুক্তিরও।
অথচ করোনা সংক্রমণের বছরে সেই জেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি অধরাই থেকে গিয়েছে তাঁর। শিকে ছেঁড়েনি তাঁদেরও, যাঁরা প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন পদের। উল্টে পুরনো কমিটির পদাধিকারীরাই মসনদে আরও আঁটসাঁটো হয়ে বসে পড়েছেন। আর তাই তৃণমূলে মানিয়ে নিতে না পেরে এবার রাজনৈতিক সন্ন্যাস গ্রহণের পথে হাঁটছেন বিশ্বরূপ।
তবে পুরনো দলে ফেরার মনোবাসনাও ঘনিষ্ঠ মহলে কবুল করেছেন তিনি। দলে থাকার সময় বিজেপির ‘গুড বুকে’ ছিলেন তিনি প্রথম থেকেই। দলীয় পদ পেয়ে বহরমপুর পুরসভার নানান অব্যবস্থা নিয়েও তাঁকে প্রতিবাদ করতে দেখেছিলেন কাশিমবাজার, সৈয়দাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষজন। বিশ্বরূপ বলেন, “বছর তিনেক বিজেপির সঙ্গে ঘর করেছিলাম। তখন মনে হয়েছিল শাসকদলে গেলে আরও সম্মান পাব। তাই দল পাল্টে ফেলে ছিলাম। আজ মনে হচ্ছে তা করে ভুলই করেছিলাম।”
এদিকে, বহরমপুর শহরের এক বিজেপি নেতাকে ভাঙিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের স্কোরকার্ডে নিজের নম্বর বাড়িয়ে ছিলেন দলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর সৌমিক হোসেন। আর দলীয় কার্যালয়ে পা দিয়েই বিশ্বরূপ টের পেয়েছিলেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এদিন তিনি বলেন, “দলে এক নেতার সঙ্গে কথা বললে অন্য নেতা গোসা করেন। অন্য নেতার সঙ্গে কথা বললে সেই নেতার রাগ হয়। এখানে সংগঠনের কোনও মাথা নেই।” আর পতাকা বদলের পর তাঁর সঙ্গে তেমন যোগাযোগ না থাকায় সৌমিকের প্রতি অভিমান দানা বেঁধেছে ইদানিং তৃণমূলের শহর সভাপতি নাড়ুগোপালের ছায়ায় থাকা বিশ্বরূপের। তিনি বলেন, “আমায় হয়তো মনেও নেই সৌমিকের।” যা শুনে সৌমিক আবার বলছেন “নিজের ইচ্ছায় নিঃশর্তে বিশ্বরূপ তৃণমূলে এসেছিলেন বলেই মনে আছে ওঁর কথা। তবে ওঁকেও ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। দল প্রয়োজন মনে করলে নিশ্চয় তাঁকে যোগ্য সম্মান দেবে।” তবে সম্প্রতি যে বিশ্বরূপের তাঁর পুরনো দলে ফেরার ইচ্ছে হয়েছে, সে কথা ঠারেঠোরে কানে গিয়েছে বিজেপি নেতাদেরও। যদিও দলবদলুকে ফের একবার দলে জায়গা দেওয়ার কথা ভাবছেন না প্রায় কেউ-ই। দলে তাঁর জায়গা নেই জানিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, “লোভে পাপ, পাপে মৃত্যূ। এছাড়া বিশ্বরূপের ক্ষেত্রে কিছু বলার নেই।”