শোকাহত: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়েরা। বগুলায়। নিজস্ব চিত্র
বারো বছর আগে দূষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিল ছোট ছেলে। এ বার বড় ছেলেও গেল।
রবিবার রাতে দুলাল বিশ্বাসের খুন হওয়ার খবর শোনা থেকে প্রায় পাথর হয়ে গিয়েছেন অশীতিপর মা শ্যামলতা। মাঝে-মাঝে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। কথা হারিয়ে ফেলেছেন দুলালের স্ত্রী প্রীতিলতাও। সোমবার দিনভর গোটা ভায়না গ্রামটাই থমথমে।
সোমবার গোটা দিনই বগুলায় দোকান-বাজার বন্ধ ছিল। গাড়িঘোড়া প্রায় চলেইনি। বগুলা কলেজের প্রথম বর্ষের টেস্ট পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। মোড়ে-মোড়ে পুলিশ। দুপুর থেকেই বগুলা কলেজ মাঠে ভিড় বাড়ছিল। বেলা ২টো নাগাদ মৃতদেহ এসে পৌঁছয়। তৃণমূলের নদিয়া জেলা পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও যুব তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায় সেখানেই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এর পরে শববাহী গাড়ি যায় ভায়নার বাড়িতে। কান্নার রোল পড়ে যায়।
রবিবার রাতে যে দলীয় কার্যালয়ে দুলাল খুন হন, সেখানে তখন হাজির ছিলেন বগুলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বিকাশ বিশ্বাস। প্রত্যক্ষদর্শী বলে নিজেকে দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা ১৫-১৭ জন ছিলাম। তিন- চার জন দূষ্কৃতী ঢুকে পড়ে। এক জন দুলালদাকে লক্ষ করে গুলি চালালেও তা ফসকে যায়। পিছন থেকে আর এক জন গুলি ছোড়ে। সেটা দুলালদার গায়ে লাগে।” আততায়ীদের মুখে কালো কাপড় বাঁধা থাকায় কাউকে চিনতে পারেননি বলে তিনি জানান।
মুর্শিদাবাদ থেকে সন্ধ্যায় বগুলায় তৃণমূলের অফিসে পুলিশের তিনটি কুকুর আনা হয়েছিল। মিনিট দশেক অফিস এবং তার আশপাশ ঘুরিয়ে সেগুলিকে হাঁসখালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও তাতে কোনও সূত্র পাওয়া গেল কি না, তা রাত পর্যন্ত জানা যায়নি।
দুলালের পুত্রবধু সুস্মিতা বলেন, “বাবা সাধারণত ছুটির দিন বিকেলের দিকে বাড়ি থেকে বেরোতেন। এই রবিবারও তেমনই বেরিয়েছিলেন। যে ভাবে ওঁর মৃত্যু হল, সেটা আমরা মানতে পারছি না। খুনিদের কঠোর শাস্তি চাই।”