অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

কাটমানি ফেরত চেয়ে জুটল মার

থানায় যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা, তার মূল প্রতিপাদ্য— পঞ্চায়েত নিবাচর্নের পর স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রেশমা সুলতানার স্বামী মহম্মদ কামরুজ্জামান প্রাধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর ও শৌচালয় তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯ ০১:০৮
Share:

‘কাটমানি’র অঙ্ক দশ হাজার!

Advertisement

আর সে টাকা পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে ফেরত চাইতে গেলে উল্টে জুটল বেধড়ক মার।

এমনই অভিযোগ করেছেন, বেলডাঙার ভাবতা পঞ্চায়েতের মহেশপুরের বাসিন্দা বাষট্টি বছরের জাহান্নারা বেওয়া।

Advertisement

থানায় যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা, তার মূল প্রতিপাদ্য— পঞ্চায়েত নিবাচর্নের পর স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রেশমা সুলতানার স্বামী মহম্মদ কামরুজ্জামান প্রাধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর ও শৌচালয় তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। তবে, মাস ঘুরে গেলেও ইট পড়েনি একটিও। এমনকি সে ব্যাপারে তদ্বির করতে গেলে শুনতে হয়েছে গালমন্দ।

বুধবার রাতে স্থানীয় একটি মুদির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সে টাকাই ফেরত চেয়েছিলেন জাহান্নারার ছেলে সমীর শেখ। তবে টাকা নয় জুটেছে মার। ‘একটু দাঁড়া’ বলে তখনকার মতো ফিরে গেলেও খানিক পরে ভাইদের নিয়ে ফিরে এসে ওই দোকানের সামনেই সমীরকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয় বলে অভিযোগ। সমীরকে মারধর করা হচ্ছে দেখে বাঁচাতে এসেছিলেন জাহান্নারা। ঘা পড়ে তাঁর উপরেও। গ্রামবাসীরা তাঁদের উদ্ধার করে বেলডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করান। এর পরেই বৃহস্পতিবার সকালে বেলডাঙা থানায় সব ঘটনা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন জাহান্নারা বেওয়া।

তিনি বলছেন, ‘‘গ্রাম সদস্যের নাম করে তাঁর স্বামী আমার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন। ব‌লেন ঘর ও শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও ঘর হয়নি। শৌচাগার নির্মাণেরও কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে টাকাটা ফেরত চাইছিলাম। আমরাই করে নেব এই ভেবে। কিন্তু টাকা ফেরত চেয়ে ফিরে পেলাম মার।’’

ভাবতা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য রেশমা সুলতানা বলেন, ‘‘ওই মহিলা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন। তিনি ঘটনাটা তৈরি করেছেন।’’ মানে? মহম্মদ কামরুজ্জামানের ব্যাখ্যা, ‘‘ওই মহিলার বাড়িতে শৌচাগার নেই। তাঁর অভিযোগ, ছেলেরা বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করবে না। আমাকে অনুরোধ করেন। ৩২০০ টাকাও দেন। আধার কার্ডের নথিও আমাকে দেন। আমি সেই টাকা ঠিকাদারকে দিয়ে দিয়েছি। সময় মতো শৌচাগার তৈরিও হবে। কিন্তু মঙ্গলবার হঠাৎ রাস্তায় তার ছেলে বলে তৃণমূলের শৌচাগার নেব না। টাকা ফেরত দে। আমাকে গালাগালি করে। তা নিয়েই কথা কাটাকাটি হয়েছে।’’ তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনিও পুলিশে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বেলডাঙা ১ ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি ইসরাইল শেখ বলেন, ‘‘তৃণমূল সব জায়গায় দুর্নীতি করছে। বলতে গেলে বলছে কংগ্রেসের ষড়যন্ত্র।’’ তবে বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘যেটুকু শুনেছি তাতে আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যের কোনও দোষ দেখছি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement