—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘বিজয় সভা’, থানা ভাঙচুর, গ্রেফতারি, দলবদল, অপহরণের অভিযোগ, হাই কোর্টে মামলা, নির্বাচন স্থগিত এবং নির্বাচনের নির্দেশ— এত যুদ্ধের পরও রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে স্থায়ী সমিতি গঠন করতে পারল না বাম-কংগ্রেস। সোমবার নির্বাচনে জয়ী হল তৃণমূল! বস্তুত, মুর্শিদাবাদের এই পঞ্চায়েত সমিতিতে স্থায়ী সমিতি গঠন নিয়ে গত এক মাস ধরে টালবাহানা চলছিল। সোমবার ভোটাভুটি শেষে দেখা গেল ২২-১৮ ভোটে কংগ্রেসকে পরাজিত করেছে তৃণমূল। যদিও হাত শিবিরের অভিযোগ, বাম ও কংগ্রেস সদস্যদের ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে। সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
মোট ২৭ আসন বিশিষ্ট রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে বাম-কংগ্রেস জোট জিতেছিল ১৪টিতে। তৃণমূল পায় ১৩টি আসন। তার পর কংগ্রেসের তিন জয়ী প্রার্থী তৃণমূলে চলে যাওয়ায় বদলে যায় সমীকরণ। যদিও দলবদল করা কংগ্রেস সদস্যদের অপহরণ করা হয়েছে বলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় তাঁদের পরিবার। পরে তাঁদের উদ্ধার করে পুলিশ। ‘অপহৃত’দের মধ্যে এক জন ছিলেন উর্মিলা খাতুন। তাঁকে নিরাপত্তা দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই উর্মিলাও সোমবার তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন বলে খবর। নির্বাচন শেষে রানিনগরের তৃণমূল বিধায়ক সৌমিক হোসেন বলেন, “আমরা চেয়েছি। তাই সিপিএম-কংগ্রেস জোট ১৮টি ভোট পেয়েছে। এটা চাইলে আমরা ৩০-১০ করতে পারতাম।’’ তাঁর দাবি, বিরোধীদের আরও কয়েক জন তৃণমূলে আসার জন্য মুখিয়ে ছিলেন। বিধায়কের সংযোজন, ‘‘যে হেতু ওরা বারবার হাই কোর্টে মামলা করছে, আবার এমন ফল হলে বলত, জোর করে নিয়েছে। তাই বলেছি, তোমরা জোটে থাকো।’’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতি বাদ দিয়ে ন’জন কর্মাধ্যক্ষ হন। সেই ন’জনেরই তৃণমূলের। কয়েক দিনের মধ্যে সমস্ত পঞ্চায়েতই তৃণমূলের হবে বলে দাবি করেছেন বিধায়ক।
অন্য দিকে, এ নিয়ে জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “মানুষের গণতান্ত্রিক মতামতের সঙ্গে বেইমানি করা হল। মানুষ যাঁদের নির্বাচিত করলেন, তৃণমূল তাঁদের প্রলোভন এবং ভয় দেখিয়ে নিজেদের দিকে টেনে নিল।’’