ছবি: সংগৃহীত
আশপাশে ছড়িয়ে আছে ৩৩টি এটিএম। তবে, টাকা আছে সাকুল্যে চারটিতে। পুজোর মুখে, বৃহস্পতিবার রঘুনাথগঞ্জের এটাই এটিএম-চিত্র। সকাল থেকেই তাই ওই চারটি এটিএমের সামনে আঁকাবাঁকা লাইন। কোথাও দুপুর কোথাও বা বিকেল পর্যন্ত সে লাইনে থিকথিকে ভিড়।
অথচ ছবিটা এমন হওয়ার কথা ছিল না। জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হওয়ার পরে, তিনি যখন অর্থমন্ত্রী, গঙ্গা পাড়ের দুই শহরে একে একে এটিএম খুলেছিল সব ক’টি ব্যাঙ্ক। শাখা খুলেছিল ২১টি ব্যাঙ্ক। সৌজন্য অর্থমন্ত্রী। সেই শহরের এ পুজোয় এমনই দশা।
সার দিয়ে এটিএমগুলির কোনওটিতে দরজা বাঙা, প্রহরীর বালাই নেই। কোনওটির টেলারিং মেশিন চোখ বুজে আছে। কোনওটিতে আশ্রয় নিয়েছে ছাগলের পাল। গত ৫ বছরে ওই সব এটিএম একের পর এক এমনই ভঙ্গুর অবস্থার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেছে। পুজোর মুখে বৃহস্পতিবার তাই এটিএম থেকে টাকা তোলা নিয়ে ভোগান্তি চরমে উঠল রঘুনাথগঞ্জে।
সমর দাস এসেছিলেন সুতি থেকে সপরিবারে। ম্যাকেঞ্জি রোডের শপিং মলে পুজোর কেনাকাটা করতে। বলছেন, “ভিড় হবে ভেবে ৯টাতেই শহরে আসি। দু’টি ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড নিয়ে এসেছিলাম। টাকা তুলে বাজার সারব। কিন্তু পরিবারের লোকজনকে মলে ঢুকিয়ে দিয়ে ৫ ঘন্টা ধরে একটি থেকে অন্য এটিএমে ঘুরে বেরিয়েছি পাগলের মতো। সুরাহা হয়নি।’’ সামিউন ইসলাম তার দাদাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য যাবেন বেঙ্গালুরুর এক হাসপাতালে। বন্ধুকে নিয়ে টিকিট সংরক্ষণের জন্য টাকা তুলতে এসে দেখেন এটিএম খারাপ। কোথাও টাকা না পেয়ে টিকিট কাটতে না পেরেই শেষতক মিত্রপুরের বাড়িতে ফিরে গেছেন।
জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের মোজাহারুল ইসলামের অভিযোগ, “এটিএম নিয়ে গোটা শহর জুড়েই অব্যবস্থা চলছে দীর্ঘ দিন ধরেই। দু একটি এটিএম ছাড়া বেশির ভাগই কাজ করে না কিংবা টাকা থাকে না। ব্যাঙ্কের তো জানা উচিত উৎসবের মরসুমে পরিস্থিতি কী দাঁড়াতে পারে।’’
একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার অবশ্য অভয় দিচ্ছেন, “রবি ও মঙ্গলবার ছুটি ছিল। তাই টাকা ফুরিয়ে গেলেও সময়ে সে টাকা ভরতে পারিনি আমরা। সে কারণেই সমস্যা।’’