প্রতিবাদে শামিল পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
বেশ কয়েক বছর আগে কল্যাণীতে তৈরি হয়েছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইআইটি)। কিন্তু বছর চারেক পেরিয়ে গেলেও এখনও নিজস্ব ক্যাম্পাসই গড়ে ওঠেনি। তার প্রতিবাদে দিন কয়েক ধরে পড়ুয়ারা অস্থায়ী ক্যাম্পাসে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ তাঁদের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। দিন দুয়েকের মধ্যে অনশন শুরু হতে পারে বলেও তাঁরা হুমকি দিয়েছেন।
কয়েক বছর আগে সংসদে আইন প্রণয়ন করে দেশে বেশ কয়েকটি ‘ট্রিপল আইটি’ তৈরি হয়। ওই আইন বলেই কল্যাণীতেও ‘ট্রিপল আইটি’ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কল্যাণী-ব্যারাকপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জমিও বরাদ্দ হয়। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি এই অলাভজনক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি সরকারের আর কোনও নজর নেই বলে পড়ুয়াদের দাবি।
ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের আক্ষেপ, আইন প্রণয়নের পর এই বিষয়টি যেন সরকার ভুলেই গিয়েছে। তাই এখনও পর্যন্ত কোনও স্থায়ী ক্যাম্পাসই তৈরি করা হয়নি। প্রথমে একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তাঁদের ক্লাস হত। পরে এক্সপ্রেসওয়ের ধারের একটি সংস্থা, ওয়েবেলের ক্যাম্পাসে তাঁদের ক্লাস হয়। কল্যাণী ‘ট্রিপল আইটি’-তে কেবল মাত্র কম্পিউটার সায়েন্সের পাঠ দেওয়া হয়। ওই বিভাগে রয়েছেন চার বর্ষের পড়ুয়ারা। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ মাত্র তিনটি। পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাঁদের ক্লাস করতেই সমস্যা হয়। আর উন্নত মানের গবেষণাগারের তো কোনও বালাই নেই। এমনকি তাঁদের থাকার জন্যা কোনও হস্টেলও নেই। ভাড়া করা বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের রাখা হয়। সেখানে নিরাপত্তা নেই।
এই প্রতিষ্ঠান থেকে আর এক বর্ষের ছাত্রছাত্রী ইতিমধ্যে পাশ করে বার হয়েছেন। পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্লেসমেন্টের অবস্থাও খুব খারাপ। নাম করা প্রায় কোনও তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাই এখানে ক্যাম্পাসিংয়ে আসেনি। আন্দোলনকারীদের তরফে চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্র বলেন, ‘‘এখানে পড়তে গেলে সেমেস্টার প্রতি এক লাখ টাকা দিতে হয়। বছরে দু’টি সেমেস্টারের ফি ও হস্টেলের খরচ মিলিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ পরিকাঠামোই তৈরি করেনি। কিছু বলতে গেলেই বলা হচ্ছে, মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। যা করার কেন্দ্রই করবে।’’
বর্তমানে স্থায়ী কোনও অধিকর্তাও নেই এখানে। খড়গপুর আইআইটি-র অধিকর্তা পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী মেন্টর অধিকর্তা হিসেবে রয়েছেন। পড়ুয়াদের ক্ষোভ প্রসঙ্গে সহকারী রেজিস্ট্রার মধুমিতা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।’’