—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচি উপলক্ষে স্বাস্থ্য দফতর রাস্তার পাশে স্বাস্থ্যশিবিরে সরকারি ডাক্তারদের রাখা ও রক্ত মজুত রাখার নির্দেশিকা জারি করে সমালোচনার মুখে পড়েছিল। তাতে অবশ্য নির্দেশিকা প্রত্যাহার হয়নি। শেষ পর্যন্ত কিন্তু সেই রক্ত মজুত রাখাও সম্ভব হয়নি। কারণ, জেলার প্রায় সব ব্লাডব্যাঙ্ক এ দিন ছিল কার্যত রক্তশূন্য।
একুশে জুলাই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা সড়কপথে কলকাতায় সমাবেশে জমায়েত হতে যান। তাঁদের যাত্রাপথে পথ দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। প্রয়োজন হতে পারে রক্তের। এই যুক্তিতে আলাদা করে রক্ত মজুত রাখার কথা সরকারি নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছিল। রাজ্য জুড়ে যখন রক্তসঙ্কট তখন কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি উপলক্ষে সরকারি ব্লাডব্যাঙ্কে আলাদা ভাবে রক্ত মজুত সম্ভব কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন চিকিৎসকদের একাংশ। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে কল্যাণী গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে মাত্র সাত ইউনিট রক্ত ছিল। কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক ছিল রক্তশূন্য। রক্তশূন্য অবস্থায় ছিল শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ২৭ ইউনিট ও রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ৩৯ ইউনিট রক্ত মজুত ছিল। কৃষ্ণনগরের জেলা হাসপাতাল ও কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল জেলার দুই বড় হাসপাতাল। এই দুই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কই এ দিন রক্ত শূন্য ছিল। সরকারি ওই নির্দেশিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকদের একটা অংশ দাবি করেছেন, ‘‘সরকারি ওই নির্দেশিকা যদি পালন করতে হয়, তা হলে চিকিৎসক জীবনে প্রবেশের আগে নেওয়া শপথ বাক্য মিথ্যে হয়ে যাবে। কারণ, এক জন চিকিৎসকের কাছে রোগীর কোনও পরিচয় হয় না। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে এমন রোগীর জীবন বাঁচাতে তাঁকে রক্ত না দিয়ে তৃণমূলের কর্মসূচির জন্য রক্ত মজুত রাখাযায় না।’’ বিষয়টি নিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘যে উদ্দেশ্য নিয়ে ওই নির্দেশিকা, তার প্রয়োজন হয়নি।’’