Nabadwip

আমিষ বর্জনের অনুরোধ, ‘বেশি’ বিরিয়ানি বিক্রি

শহরের প্রায় সব বাজার কমিটির দাবি, শুক্রবার কোথাও প্রকাশ্যে মাংস বা মাছ বিক্রি হয়নি। অথচ, শহরের বেশির ভাগ হোটেল-রেস্তরাঁয় অন্য দিনের মতোই বিক্রি হয়েছে মাছ-মাংসের পদ। মালিকেরা জানিয়েছেন, বিক্রেতারাই তাঁদের মাংস পৌঁছে দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ০৭:৩২
Share:

বিরিয়ানি। ছবি: সংগৃহীত।

দোলের দিন নবদ্বীপে রং খেলার পাশাপাশি, পুরপ্রধানের আমিষ বর্জনের অনুরোধ ঘিরে চলল ‘লুকোচুরি’। শহরের প্রায় সব বাজার কমিটির দাবি, শুক্রবার কোথাও প্রকাশ্যে মাংস বা মাছ বিক্রি হয়নি। অথচ, শহরের বেশির ভাগ হোটেল-রেস্তরাঁয় অন্য দিনের মতোই বিক্রি হয়েছে মাছ-মাংসের পদ। মালিকেরা জানিয়েছেন, বিক্রেতারাই তাঁদের মাংস পৌঁছে দিয়েছেন। যদিও পুরপ্রধানের দাবি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়েছেন।

Advertisement

অন্য বারের মতো এ বছরেও দোলের প্রশাসনিক প্রস্তুতিসভায় পুরপ্রধান নাগরিকদের দোলের আগে-পরে মিলিয়ে তিন দিন আমিষ বর্জনের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ও শনিবার যে যথারীতি মাছ-মাংস বিক্রি হবে তা ব্যবসায়ীরা আগেই জানিয়েছিলেন। তবে দোলের দিন নবদ্বীপের মাছ-মাংসের ক্রেতাদের একটা বড় অংশ বাজারের পথ মাড়ান না বলে বহু দোকান খোলা হয় না। শুক্রবার তার ব্যতিক্রম হয়নি।

শনিবার নবদ্বীপের অন্যতম ব্যস্ত চারিচারাপাড়া বাজার পরিচালন কমিটির সম্পাদক অলোক দাস বলেন, “বাজারে শুক্রবার মাছ-মাংস বিক্রি হয়নি। আজ কয়েক জন মাছ নিয়ে বসেছেন।” একই কথা জানান আগমেশ্বরী বাজার কমিটির সভাপতি হিমাংশু সাহা, তেঘরিপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি লালু মোদক, ওলাদেবীতলা মুক্তকেশী মাতা বাজার কমিটির সম্পাদক বৃন্দাবন মণ্ডলেরাও। শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজার বাজার মৎস্য ব্যবসায়ীদের তরফে গোপাল দাস বলেন, “কমিটির তরফে দোলে ভান্ডারার আয়োজন হয়েছিল। তাই আমিষ কেনাবেচা হয়নি।”

Advertisement

নবদ্বীপ শহরের বৈষ্ণব মঠমন্দিরগুলি আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৭ থেকে পুরসভা এই আমিষ বর্জনের ‘অনুরোধ’ জানিয়ে আসছে। নবদ্বীপের বাসিন্দা তথা ‘নাস্তিক মঞ্চ’-এর রাজ্য সম্পাদক প্রতাপচন্দ্র দাসের বক্তব্য, “শুক্রবার বাজারে না হলেও গলিঘুঁজিতে মাছ-মাংস বিক্রি হয়েছে। আমিও কিনেছি। মাংস বিক্রেতারা বাড়ি থেকে ব্যবসা করেছেন।”

শহরে বিরিয়ানির জন্য পরিচিত এক রেস্তরাঁর মালিক শ্যামল দাসের দাবি, “অন্য দিনের তুলনায় দোলের সন্ধ্যায় বিরিয়ানি বেশিই বিক্রি হয়েছে।” কোথায় পেলেন মাংস? শ্যামল বলেন, “দোলের দিন বাজারে মাংস-মাছ বিক্রি হয় না। যাঁরা সারা বছর মাংস সরবরাহ করেন, তাঁরাই সে দিন এসে দিয়ে যান।” অন্য হোটেল-রেস্তরাঁর মালিকরাও একই কথা জানান।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নবদ্বীপের বাজারগুলিতে রোজকার মাংসের একটা বড় জোগান আসে পার্শ্ববর্তী পূর্ব বর্ধমানের শ্রীরামপুর থেকে। তা যথারীতি এসেছে। দোলের আগের দিনই পরিমাণ মতো মাছ তুলে রেখেছিলেন অনেক হোটেল মালিক। আবার জোগানের অভাবে একাধিক হোটেল-রেস্তরাঁ বন্ধও ছিল। রাজকুমার ঘোষ, বাবলু দাসেদের কথায়, “দোলে মাংসের জোগান কম থাকে। খরিদ্দারকে বাসি মাছ খাওয়াতে হয়। তাই হোটেল বন্ধ রাখি।” তবে পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহার দাবি, “সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আবেদনে সাড়া দিয়েছেন। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু হলে, সেটা আলাদা কথা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement