Adenovirus

শিশুদের জ্বরে ভাইরাস-ভয়, মাস্কে জোর

হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, রবিবার পর্যন্ত হাসপাতালের শিশু বিভাগে ৬৭টি শয্যায় ১১৫ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। একাধিক বেডে দু’জন করে শিশু রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৩
Share:

রবিবার পর্যন্ত হাসপাতালের শিশু বিভাগে ৬৭টি শয্যায় ১১৫ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। প্রতীকী ছবি।

অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রকোপ শিশুদের ওপর ধীরে ধীরে বাড়ছে। বিশেষ করে, পাঁচ বছর বয়সের নীচের শিশুদের বেশ ভাল রকম ভোগাচ্ছে এই ভাইরাস, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। জেএনএম হাসপাতালের শিশু বিভাগে জ্বর, ঠান্ডা, পেটের গণ্ডগোল নিয়ে ভর্তি পাঁচ বছরের নীচে শিশুদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ শিশুই অ্যাডিনো ভাইরাস আক্রান্ত বলে দাবি তাঁদের।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, রবিবার পর্যন্ত হাসপাতালের শিশু বিভাগে ৬৭টি শয্যায় ১১৫ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। একাধিক বেডে দু’জন করে শিশু রয়েছে। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কিছু শিশুর পরীক্ষা করা হয়েছে, তারা অ্যাডিনো ভাইরাস আক্রান্ত। বাকি অনেকেরই উপসর্গ দেখে অ্যাডিনো ভাইরাস আক্রান্ত বলেই মনে হচ্ছে।

চিকিৎসকদের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে, এবারের অ্যাডিনো ভাইরাসে শিশুদের উপরে ক্ষতিকর প্রভাবও বেশি দেখা যাচ্ছে। এবারের অ্যাডিনো ভাইরাস অনেক শিশুর ক্ষেত্রেই নিউমোনিয়ার মতো হয়ে যাচ্ছে। আবার, অনেকের ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেও দীর্ঘ দিন ধরে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা থাকছে। অন্য বছর এই সমস্যা সে ভাবে দেখা যায়নি। যা চিকিৎসকদের কিছুটা হলেও উদ্বিগ্ন করছে। গত সপ্তাহেই আড়াই মাসের একটি শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটে জেএনএম হাসপাতালের শিশু বিভাগে। তার অবশ্য সিভিয়ার নিউমোনিয়ার সঙ্গে সংক্রমণ ছিল।

Advertisement

হাসপাতালের শিশু বিশেজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুদের সাধারণ জ্বর, ঠান্ডা লাগার মতোই হয়। তবে তার সঙ্গে যদি গলাব্যথা, পেটের গণ্ডগোল, চোখে পিচুটি পড়ার মতো লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তা হলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসার প্রয়োজন। অবশ্য এই ভাইরাসের জন্য নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসাও নেই। জেএনএমের শিশু বিশেষজ্ঞ অরিজিৎ দাস বলেন, “আডিনো ভাইরাসের জন্য কোনও অ্যান্টি-ভাইরাস দেওয়া হয় না। যে যে লক্ষণগুলো দেখা যাবে, সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে।”

এই ভাইরাস থেকে সাবধান হতে হলে করোনার মতোই শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও সাবধান হতে হবে বলে জানাচ্ছেন হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মঞ্জরী বসু। বলেন, “বাইরে গেলে বড়দের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদেরও যতটা সম্ভব মাস্ক পরতে হবে। বাইরে থেকে এলে ভাল করে হাত ধোয়া প্রয়োজন।”

জেএনএম হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, অ্যাডিনো ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা বেলেঘাটার নাইসেডে পাঠাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাডিনো ভাইরাসের পরীক্ষা নিয়ে এমসের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন। এমস আগামী দু’তিন সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা চালু করতে পারে। যদিও এমসের জনসংযোগ আধিকারিক সুকান্ত সরকারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি।

অন্য দিকে, জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, অ্যাডিনো ভাইরাসের জন্য জেলায় কোনও পরীক্ষা করা হচ্ছে না। অ্যাডিনো ভাইরাসের কতগুলো লক্ষণ রয়েছে, সেই অনুযায়ী সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিশচন্দ্র দাস বলেন, “অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে এখনও কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশ আসেনি। যে নির্দেশগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো মেনে চলা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement