Coronavirus

লকডাউনের স্তব্ধতায় কোপ পড়েছে পদ্মায়

এক দিকে লকডাউনে আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। তার  ওপর এ বার ঘর-বাড়িও পদ্মা খেয়ে নিলে তাঁরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সুতি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ০২:২৪
Share:

চলছে মাটি কাটা। নিজস্ব চিত্র

লকডাউনের নিস্তব্ধতার সুযোগে কোপ পড়ছে পদ্মার পাড়ের মাটিতে। যা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন কিংবা পুলিশ বিস্ময় প্রকাশ করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন। করোনা-ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে পদ্মার কোলে মাটি মাফিয়াদের রুখতে উদ্যোগের প্রশ্নেও তাঁদের গয়ংগচ্ছ মনোভাবে সুতির কাঁকড়ামারি এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওই মাফিয়ারা। আশপাশের গাঁ-গঞ্জের মানুষ প্রতিবাদ করলে তাঁদের মারধর করা থেকে প্রাণনাশের হুমকি, বাদ যাচ্ছে না কিছুই। গত কয়েক দিনে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে মাটি কাটার ফলে একই সঙ্গে এলাকায় লকডাউনের নিয়ম বিধির লেশ মাত্র নেই এলাকায়। পদ্মা-পাড়ে ক্রমাগত কোদালের কোপ পড়ায় আগামী বর্ষায় পাড় ভেঙে বানভাসির সম্ভাবনার পথও প্রশস্ত হচ্ছে ক্রমশ।

Advertisement

গ্রামের মানুষ চিন্তায় আকুল। তাঁরা বলছেন, এক দিকে লকডাউনে আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। তার ওপর এ বার ঘর-বাড়িও পদ্মা খেয়ে নিলে তাঁরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন? প্রশাসনের উচিত এখনই এই সমস্যা দূর করতে মাঠে নেমে পড়া।

এলাকায় পা রেখে দেখা গিয়েছে, শয়ে শয়ে ট্রাক্টর উপচে পড়া মাটির পাহাড় নিয়ে চলেছে আশপাশে ইটভাটা। রাস্তায় মাফিয়াদের বাহুবলীদের সদলে দৌরাত্ম্য চলেছে সমান তালে। ফলে লকডাউনের নিয়ম মধুলোয় লুটিয়ে কয়েকশো শ্রমিক গায়ে গা ঘেঁষে কাজ করছেন দিবারাত্র। সুতি ২ ব্লকের লক্ষ্মীপুর পঞ্চায়েতের বড় কাঁকড়ামারি এলাকার ওই মাটি-মাফিয়া রাজের কথা শুনে দিন কয়েক আগে, ভূমি সংস্কার দফতরের সুতি ২ ব্লক আধিকারিক গোপাল পাল ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তবে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দেখেশুনে ফিরে যাওয়া ছাড়া ভূমি সংস্কার দফতরের আর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। । সুতি ২`র বিডিও সৌভিক ঘোষ বলেন, “ ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। সরকারকে রাজস্ব দিয়েই চরের জমির মাটি কাটা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে।`` বিডিও-র বক্তব্যে আইন মেনেই মাটি কাটার ইঙ্গিত থাকলেও অতিরিক্ত জেলাশাসক অংশুল গুপ্ত বলছেন, “আমি বিষয়টি দেখছি। পুলিশের সঙ্গেও কথা বলছি।”

Advertisement

আর জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টই বলছেনষ “ অভিযোগ পেয়েই আমি সুতি থানার পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। কাজ এখনও বন্ধ হয়নি কেন খোঁজ নিচ্ছি।``গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, প্রশাসনের এক কর্তা মাটি-কাটায় ছাড় দিলেও অন্য জন তা নিয়ে পুলিশকে খোঁজ নিতে বলছেন কেন, কেনই বা পুলিশ কর্তারা কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও স্থানীয় থানা চোখ বুজে রয়েছে? এর উত্তর কারও কাছে নেই।বড় কাঁকড়ামারি গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের জিয়াউল হক বলেন," মাটি কাটা বন্ধ করার জন্য বহুদিন ধরে চেষ্টা করে আসছি। কিন্তু পারিনি।গ্রামের সবাই চায় মাটি কাটা বন্ধ হোক। বুধবার আবার আবার যাব সেখানে। " গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আগামী বর্ষায় নদী পাড় ভেঙে গ্রাম ভাসালে ভুগবেন তাঁরা। তাই আপত্তি তুলেছিলেন তাঁরা। ফলও পেয়েছেন হাতেনাতে—মাটি মাফিয়াদের কাছে বেধড়ক মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই মহিলা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement