আমলাইয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র
মাস তিনেক আগেও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে নানা অভিযোগ শোনা যেত গ্রামবাসীদের মুখে। সপ্তাহে রোজ না এসে কেন তিন দিন চিকিৎসক আসেন, সেই নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলতেন। গত দেড় মাস আর ওই অভিযোগ শোনা যায় না ভরতপুর-১ ব্লকের আমলাই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে। কারণ, করানো আবহে এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ছ’দিনই চিকিৎসক আসছেন। লকডাউনে হাতের কাছেই চিকিৎসক পেয়ে খুশি আমলাই এবং আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আমলাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন স্থায়ী চিকিৎসক রয়েছেন। তবে এতদিন তিনি সপ্তাহে তিন দিন করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে রোগী দেখতেন। বাকি তিনদিন ফার্মাসিস্টের ওপর নির্ভর করতে হত স্থানীয় বাসিন্দাদের। কিন্তু কোভিড-১৯ ঠেকাতে লকডাউন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টে গিয়েছে ওই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক ও অনান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা কম। ওই ব্লকের জজান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে কোনও চিকিৎসক নেই। সেই কারণে আমলাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক সপ্তাহে তিনদিন সেখানে গিয়ে রোদী দেখতেন। প্রায় এক বছর এ ভাবেই চলেছে। তারপর দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, প্রত্যেকটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বহির্বিভাগে চিকিৎসক গিয়ে চিকিৎসা করবেন। সেই মতো আমলাইয়ের চিকিৎসককে আর জজানে পাঠানো হচ্ছে না। আপাতত ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে দু’জন চিকিৎসককে সপ্তাহে মোট ছ’দিন পাঠানো হচ্ছে। এদিকে, লকডাউনে গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় দূরের হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ায় সমস্যা হতে পারত আমলাইয়ের বাসিন্দাদের। কিন্তু হাতের কাছে ছ’দিন চিকিৎসক পেয়ে তাঁদের সেই দুর্ভোগে পড়তে হয়নি। ভরতপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অবিনাশ কুমার বলেন, “সাধারণ মানুষ যাতে কোনও ভাবেই করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হন, সে কথা মাথায় রেখে আমলাই স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ ব্লকের সমস্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে নিয়মিত চিকিৎসক যাচ্ছেন।’’তবে আমলাইয়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে একজন নার্সের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সেটুকু অসুবিধে ছাড়া পরিষেবা নিয়ে খুশি সাধারণ মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা গোপাল দে বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আগের চেয়ে বেশি দিন ডাক্তারবাবু থাকছেন। এতে অনেক সুবিধা হয়েছে। তবে সন্ধ্যার পরেও চিকিৎসার সুযোগ থাকলে ভাল হয়। তাহলে আর গুরুতর অসুস্থকে নিয়ে রাতবিরেতে ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ছুটতে হয় না।’’