কৃষ্ণনগরে বিজেপির পথ অবরোধে শিকেয় পারস্পরিক দূরত্ববিধি। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে আটকে রইল যানবাহন। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
গ্রাম্য বিবাদের জেরে খুন হওয়া যুবককে দলীয় কর্মী বলে দাবি করে রাস্তায় নামল বিজেপি। দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে দেখানো হল বিক্ষোভ।
শুক্রবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কিছু সময় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও একাধিক রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতাকর্মীরা। একাধিক জায়গায় উপস্থিত ছিলেন অর্জুন সিংহ। বিজেপির কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকারের নেতৃত্ব বেশ কিছু সময় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। জেলাসদর কৃষ্ণনগরেও পথ আবরোধ করা হয়।
বিজেপির দাবি, ওই খুনের ঘটনায় জড়িত তৃণমূল। তাদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা খুনিদের গ্রেফতার করতে হবে। পাশাপাশি, জেলার অন্যত্র বিজেপি কর্মীদের উপরে তৃণমূল যে হামলা চালাচ্ছে, তা বন্ধ করতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে ভীমপুরের পূর্ব ভাতজাংলায় জমির উপর দিয়ে ট্রাক্টর যাওয়া নিয়ে বিবাদের সালিশি সভা বসেছিল। সেখানেই দুই পক্ষের মধ্যে গন্ডগোলে আহত হন পাশের গলাকাটা ভাতজাংলা গ্রামের বাসিন্দা বাপি ঘোষ (৩৮)। তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল হয়ে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বুধবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর-মাজদিয়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। আশপাশের পাঁচটা পঞ্চায়েত এলাকা বনধ ডাকে। বাপির মৃতদেহ দলের কৃষ্ণনগর কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
ওই রাতেই বিজেপি ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। মৃতদেহ বাড়ি থেকে নবদ্বীপ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার সময়ে কৃষ্ণনগরে জেলা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বিজেপি। কিন্তু আটকে দেয় পুলিশ। কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়কের উপরে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপির লোকজন। শেষ পর্যন্ত জেলা পলিশের কর্তারা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। মৃতদেহ চ্যালেঞ্জ মোড় পর্যন্ত নিয়ে এসে মাল্যদান করেন বিজেপি নেতারা। তার আগেই অবশ্য পুলিশের সঙ্গে বাগবিতন্ডা চলাকালীন মাল্যদান না করে ফিরে যান বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া কনভেনর সন্দীপ মজুমদারের দাবি, “আমাদের আরও একজন কর্মী তৃণমূলের সন্ত্রাসের শিকার হল। এরই প্রতিবাদে আমাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি।।” যদিও তা উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, “এটা নেহাতই গ্রাম্য বিবাদ। মৃতদেহ নিয়ে মিথ্যা রাজনীতি করা হচ্ছে। মানুষই এর জবাব দেবে।”