—প্রতীকী ছবি।
জেলায় শাসকদলের অন্দরে বিবাদ আপাতত সর্বজনবিদিত। বিভিন্ন সময় দলীয় নেতাদের কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসছে। প্রবীণ কিছু নেতার ক্ষমতা খর্ব হওয়ায় জমেছে অসন্তোষের মেঘ। তীব্র হচ্ছে দলের ক্ষুব্ধ-বিদ্রোহী বিজেপিতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা।
এই রকম কঠিন সময়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দূরত্ব কমানোর চেষ্টার বদলে দলের জেলা সভাপতি স্থানীয় বিধায়ককে না জানিয়ে দক্ষিণের বিধানসভাগুলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। এতে বিশেষ করে জেলার দক্ষিণ অংশের বিধায়কদের অনেকেই ক্ষুব্ধ। তাঁদেরই এক জন দলের প্রবীণ নেতা তথা রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমের বিধায়ক শঙ্কর সিংহ। প্রথম দিকে দু-একটা বৈঠকে তাঁকে দেখা গেলেও তার পর আর কোথাও দেখা মিলছে না। কোনও রকম আড়়াল না করে শঙ্করবাবু খানিকটা নিস্পৃহ ভাবে বলছেন, “উনি কোথায় কী কর্মসূচি নিচ্ছেন সেটা বলতে পারব না। আমার কিছু জানা নেই।” রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক সমীর পোদ্দার-ও বলছেন, “উনি নিজের মতো করেই কর্মসূচির আয়োজন করছেন। এতে ভালই হবে।” তবে চাকদহের বিধায়ক তথা মন্ত্রী রত্না ঘোষ বলছেন, “আমাকে প্রতিটা কর্মসূচির কথা বলা হয়েছে। আর আমি প্রতিটাতেই উপস্থিত থেকেছি।”
প্রসঙ্গত লোকসভা ভোটে জেলার দক্ষিণেই মূলত বিজেপির কাছে ভরাডুবি হয়েছে দলের। এখানেই অধিকাংশ বিধায়কের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মিসভা করছেন বলে দল সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা তৃণমূলের একটা বড়় অংশের দাবি, এতে কর্মীদের মনবল বৃদ্ধি তো দূরের কথা বরং হতাশা ও ক্ষোভ বাড়়বে। তাতে বিপদ হবে দলেরই।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলা নেতৃত্ব কৃষ্ণনগরে জেলা পরিষদের সভাকক্ষে জেলা কমিটির সদস্য ও বিধায়কদের নিয়ে যে বৈঠক ডেকেছিলেন সেখানে দেখা যায়নি জেলার প্রায় কোনও পুরনো নেতা-বিধায়ককে। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, এলাকায় বিধায়কদের ‘উপেক্ষা করে কর্মী বৈঠক করার পর আর তাঁরা জেলা নেতৃত্বের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন বোধ করেন নি। রানাঘাটের তৃণমূলের এক প্রবীণ সদস্যের কথায়, “একেই হয়তো বলে, ভোটের ময়দানে বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে আত্মঘাতী হওয়া।” আর জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলেন, “এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই, তাই মন্তব্য করব না।”