মুর্শিদাবাদে বোর্ড গঠন নিয়ে ‘শঙ্কিত’ বিরোধীরা, তেমনি বোর্ড গঠন নিয়ে দলের একাংশকে নিয়ে আশঙ্কায় তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও পড়শি জেলা নদিয়া কিংবা উত্তরবঙ্গের মত সংঘর্ষের ঘটনা এখনও ঘটেনি। তবে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে। এরই মধ্যে সোমবার থেকে জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন শুরু হয়। তার আগেই শাসক দলের ঘোড়া কেনাবেচা ঠেকাতে বেলডাঙা-১ ব্লকের চৈতন্যপুর-১ পঞ্চায়েতের দলীয় জয়ী সদস্যদের ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে বিজেপি। কোথাও আবার শাসক দলের নেতা তাঁর ‘অনুগামী’ জয়ী সদস্যদের গোপন ডেরায় রেখে দিয়েছেন, যাতে বিরুদ্ধ গোষ্ঠী তাঁদের দলে টেনে নিতে না পারে। বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে।
বেলডাঙা ১ ব্লকের মহুলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনের মধ্যে ১৪টি দখল করেছে বিজেপি। বাকি ৪টি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বিজেপি স্বস্তিতে ছিল না। তাঁদের জয়ী সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে দলে টানার চেষ্টা করছিল বলে শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ। তার মধ্যে জয়ী এক সদস্যকে অগস্টের প্রথম সপ্তাহে বেলডাঙা থানার পুলিশ গ্রেফতার করার পরেই বিজেপি নেতৃত্ব আর ঝুঁকি নেয়নি। ওই পঞ্চায়েতে জয়ী বাকি ১৩ সদস্যকে ঝাড়খণ্ডে পাঠিয়ে দেয়। আজ মঙ্গলবার ওই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন রয়েছে। তবে বিরোধীরা নয়, দলের একাংশ ভাঙাতে পারে আশঙ্কা করে লালগোলার পাইকপাড়া ও বাহাদুরপুর পঞ্চায়েতে ‘অনুগামী’ জয়ী অধিকাংশ সদস্যকে গোপন ডেরায় নিয়ে গিয়ে রেখেছেন লালগোলা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শুভরঞ্জন রায়। এ ব্যাপারে লুকোছাপা করছেন না শুভরঞ্জন রায়। তিনি বলছেন, ‘‘রবিবার বিকালে জানতে পারি দলের একটি অংশ তাঁদের পছন্দ মত লোককে প্রধান করতে চাইছে। তারা পঞ্চয়েত সদস্যদের হুমকিও দিচ্ছে। তাই কোনও ঝুঁকি নিইনি।’’ এ দিন লালগোলা থানার বাহাদুরপুর, পাইকপাকপাড়া ও নশিপুর পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন রয়েছে।
তবে বোর্ড গঠনে ফরাক্কার বেওয়া-২ পঞ্চায়েতে এ দিন ধাক্কা খেয়েছে শাসক দল। ১২ জন সদস্যের ওই পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের ৫ ও বিজেপির ৩ জন সদস্য হাত মিলিয়ে বোর্ড গড়েছে। তৃণমূলের ৩ জন এবং সিপিএমের ১ জন সদস্য বিরোধিতা করেন। প্রধান হয়েছেন কংগ্রেসের ছোটন মেহেরা এবং উপপ্রধান হন বিজেপির অনিতা মন্ডল। কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক অবশ্য বলছেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপি’র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন কংগ্রেসের সদস্যরা। তবে এর সঙ্গে দেশের রাজনীতির কোনও
সম্পর্ক নেই।”
সংরক্ষণের গেরোয় সাগরদিঘির বোখরা-১ পঞ্চায়েতে প্রধান পদ পেয়েছে কংগ্রেস। ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও জয়ী সদস্যদের মধ্যে তফসিলি জাতির মহিলা সদস্য না থাকায় কংগ্রেসের শ্রাবণী দাসকে মেনে নিতে হয়েছে শাসক দলকে। একই কারণে ভরতপুর-১ ব্লকের গুন্দরিয়া পঞ্চায়েতে উপপ্রধান হয়েছেন বিজেপি’র মেনকা কোনাই। ওই ব্লকের ভরতপুর, সিজগ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছে শাসক দল।